কুয়ালালামপুর: প্রতি বছরের মতো এবারও মালয়েশিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
কুয়ালালামপুরের উইসমা পেলাডাং মিলনায়তনে সপ্তাহব্যাপী এ দুর্গোৎসবের আয়োজন করে মালয়েশিয়ান বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন।
উৎসবে দুই বাংলার প্রবাসীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কলকাতা, মেদিনীপুরের বাঙালি ছাড়াও বাঙালি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ান নাগরিকরা উদযাপন করেন এ উৎসব।
নেত্রকোনার নিখীল চন্দ্র শীল পেশায় একজন কারখানা শ্রমিক। আট বছর ধরে মালয়েশিয়ায় থাকছেন তিনি। প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় ঘরে বসে নয়তো শপিং মলে ঘুরে সময় কাটতো তার। কিন্ত গত বছর তিনি জানতে পারেন, মালয়েশিয়ায় কোথাও দুর্গাৎসবের আয়োজন করা হয়। খবর নিয়ে তারপর থেকে বন্ধু-বান্ধব-পরিচিতজনদের নিয়ে বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়শনের দুর্গোৎসবে চলে আসেন তিনি।
নিখীল চন্দ্র শীল বলেন, ‘আমরা উৎসব-পার্বনের দেশের লোক, অথচ নিজেদের সবচেয়ে বড় উৎসবে ঘরে বসে থাকতে হতো, নয়তো শপিং মলে ঘুরতে হতো। গত দু’বছর ধরে মণ্ডপে আসতে পেরে এখন আর কষ্ট হয় না। ’
নিখীলের মতই ঢাকা জেলার প্রদীপ মালয়েশিয়ায় আছেন প্রায় ২০ বছর ধরে। গত আটটি পূজায় তিনি এখানে উৎসব করেন।
প্রদীপ জানান, পূজার সময়টাতে ঢাকের বাড়ি, শাঁখের আওয়াজ না হলে জমেই না। তাই সপরিবারে প্রতি দুর্গাপূজায় এখানে চলে আসেন তিনি।
মালয়েশিয়ান বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫২ সালে। এরপর থেকেই প্রতি বছর দুর্গাপুজা, কালীপূজাসহ রবীন্দ্রজয়ন্তী, পহেলা বৈশাখের মত উৎসবের আয়োজন করে আসছে এটি।
প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান উপদেষ্টা শিক্ষাবিদ শিক্ষাবিদ ডক্টর সুধীর রন্জন সেনগুপ্ত বলেন, প্রথমদিকে উৎসবের পরিসর ছোট থাকলেও এখন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সংখ্যা এক হাজারের বেশি।
তিনি বলেন, এবারের প্রতিমা কলকাতা থেকে বানিয়ে আনা হয়েছে এবং পুরোহিতও এসেছেন দিল্লি থেকে। যেহেতু প্রতিমা খানিকটা ব্যয়বহুল, তাই প্রতি বছর বিসর্জন না দিয়ে প্রতি তিন চার বছর পর পর প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
সুধীর রন্জন সেনগুপ্ত জানান, মালয়েশিয়ান বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশ্য শুধু বছরের কয়েকটি দিন বাঙালিদের একত্রিত করা নয়। প্রবাসী বাঙালিদের অন্তরে বাংলা সংস্কৃতি ধরে রাখা এবং নতুন প্রজন্মের সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেওয়া।
আর এই কাজ সফল করতে অক্লান্তভাবে পরিশ্রম করে যাওয়া অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি নমিতা চৌধুরী, সহ-সভাপতি অমিতা নন্দী, সাধারণ সম্পাদক সুচিতা সেনগুপ্তসহ আয়োজক কমিটির সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৫
আরএইচএস/এইচএ/