ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় সম্ভাবনার শ্রমবাজার ‘নষ্ট করছে’ দালালচক্র

তামিম মজিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৮
মালয়েশিয়ায় সম্ভাবনার শ্রমবাজার ‘নষ্ট করছে’ দালালচক্র মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত কয়েকজন প্রবাসী। ছবি: বাংলানিউজ

কুয়ালালামপুর (মালয়েশিয়া) থেকে: দালালদের দৌরাত্ম্যে যেমন নষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশিদের জন্য সম্ভাবনাময় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার, তেমনি  রয়েছে সরকারের  পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অভাবও। প্রবাসে কিছু অসাধু বাংলাদেশিদের কারণে শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে অন্যান্য দেশ। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবকাঠামোগত শিল্প নৈপুণ্যের অভূতপূর্ব উন্নয়নের পরও পূর্ব এশিয়ার দেশটির নির্মাণ খাতে ব্যাপক চাহিদা বাংলাদেশি শ্রমিকদের। এছাড়া কৃষি ও কারখানাসহ বিভিন্ন খাতে অনেক চাহিদা রয়েছে।

কিন্তু প্রয়োজনীয় উদ্যোগ বাস্তবায়ন ও প্রবাসী দালালচক্রের কারণে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ।  

প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই শ্রম বাজার হারানোর পেছনে বাংলাদেশ সরকারের উদাসীনতাও রয়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী বিদেশে পাঠানো যায়, তাহলে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশিদের।  

প্রবাসীরা জানান, বাংলাদেশ থেকে এখন থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রনেই রুট ব্যবহার করছে মানবপাচারকারী দালালচক্র। বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াজুড়ে রয়েছে বাংলাদেশি দালালচক্রের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। প্রভাবশালীদের কারণে বরাবরই অধরাই থেকে যায় এ চক্রের গডফাদাররা।

পড়ুন>> মালয়েশীয় অভিবাসন নীতির জটিলতায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিরাই

তবে নৌপথে বর্তমানে অনেকটা মানবপাচার বন্ধ রয়েছে। দালালচক্রের ব্যাপারে সরকার কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করলে মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসী কমবে।  

একাধিক প্রবাসী বলেন, কারিগরি জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ দিয়ে জনশক্তি পাঠালে সুপার শপ, গ্রোসারি শপ, ক্যাফেসহ এই খাতে ভালো অবস্থানে যেতে পারবে বাংলাদেশিরা। হাড় ভাঙা পরিশ্রমের জন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদাই বেশি দেশটির সব সেক্টরে। অবকাঠামো উন্নয়ন উন্নত বিশ্বের মতো হওয়া স্বত্ত্বেও মালয়েশিয়ায় এখনও নির্মাণ সেক্টরে কর্মযজ্ঞ চলছে।  

তারা বলেন, যেখানে ভিয়েতনাম ও নেপালসহ অন্য দেশের নাগরিকরা মালয়েশিয়ায় আসতে শুধুমাত্র প্লেনের টিকিটের টাকা খরচ হয়, সেখানে বাংলাদেশিদের আসতে খরচ হয় ২ থেকে ৫ লাখ টাকা। এরপরও বৈধভাবে শ্রমিক যেতে পারছে না মালয়েশিয়ায়।  

পড়ুন>> মালয়েশিয়ায় সস্তা শ্রমের বাংলাদেশিরা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‍একাধিক প্রবাসী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সরকার যদি দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে শ্রমিকদের পাঠানোর ক্ষেত্রে খরচ কমানোর ব্যবস্থা করে সেক্ষেত্রে  মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আমাদেরও প্রভাব বাড়বে। তবে সবার আগে অবৈধ পথে আসা বন্ধ করতে হবে।  

কুয়ালালামপুরে প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আশীষ কুমার সরকার বলেন, আমাদের খাই খাই মনোভাব পরিহার করে সরকার যদি অন্যান্য দেশের মতো জনশক্তি পাঠানোর উদ্যাগ নিয়ে বাস্তবায়ন করতে পারে,  তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ হবে বিশ্বের টপ প্রবাসী আয়ের দেশ। কারণ বাংলাদেশের প্রচুর জনসংখ্যা রয়েছে, সঠিক পরিকল্পনা নিলে তারাই সম্পদে পরিণতে হবে।  

কুয়ালালামপুরের চায়না মার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুর রবও মনে করেন, দালালদের দৌরাত্ম্য যতদিন থাকবে, ততদিন বাঙালি আতংকের নাম হিসেবেই থাকবে।  

বিদেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী পাঠানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষিতরা আসলে মধ্যম লেভেলের সেক্টরে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। আর শ্রমিক পাঠালে অবশ্যই প্রশিক্ষণ তথা কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠানো উচিত।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর  ২০, ২০১৮
টিএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ