ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পল্টনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২২
পল্টনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ নেই

ঢাকা: যতক্ষণ পর্যন্ত বিএনপি কার্যালয়ের সামনের রাস্তা মানুষের চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্তনা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই রাস্তা বন্ধ থাকবে। পুলিশ কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে আটকাচ্ছে না।

তবে সেখানে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে পল্টন থানার সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার।

তিনি বলেন, বিএনপির দলীয় কার্যালয়কে আমরা এখন আইনের ভাষায় বলছি, প্লেস অব অকারেন্স (পিও)। যে কারণে আমরা বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে কর্ডন করে রেখেছি। বিশেষজ্ঞ ও ক্রাইম সিনের লোকজন ছাড়া কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত পুলিশের কাজ শেষ না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এখানে কোনো কিছুই হতে দেওয়া হবে না।  

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা গতকাল সতর্কতামূলক অবস্থানে ছিলাম। কাউকে মারধর, হামলা করার উদ্দেশ্য পুলিশের ছিল না। কিন্তু একপর্যায়ে যখন বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তা ব্লক করে অবস্থান নেয়, জনসাধারণের চলাচল বিঘ্ন সৃষ্টি করে, তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।

কিন্তু একপর্যায়ে ডিসি মতিঝিলসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা হয়। যখন পুলিশের ওপর হামলা হয় তখন জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে, বাধ্য হয়েছি অভিযান পরিচালনার জন্য।

পুলিশের ওপরে হামলা হয়েছে, ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে, নাশকতার চেষ্টা হয়েছে, নাশকতার সব ধরনের উপকরণ এখানে আনা হয়েছিল বলেও আমরা জানতে পারি। পরিচালিত অভিযানে নাশকতার যাবতীয় উপাদান আমরা এখান থেকে জব্দ করেছি।  

বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, একটি রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয়ে নাশকতার উপাদান পাওয়া যায়, ককটেল পাওয়া যায়। এটা রাজনৈতিক কোনো সংস্কৃতির মধ্যেই পড়ে না। ককটেল রাখার জায়গা হিসেবেই আমরা এখন বিএনপি কার্যালয়কে ট্রিট করছি। আমাদের ক্রাইম সিন ইউনিট কাজ করছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপাতত এই এলাকায় যানচলাচল এবং জনসাধারণের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

যে রাস্তা ব্লক হওয়ার কারণে বিএনপি নেতা কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সে রাস্তাটি এখন পুলিশ বন্ধ করেছে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি একটি মারাত্মক বড় ঘটনাস্থল। এখানে অনেক ককটেল পাওয়া গেছে, আরও ককটেল থাকতে পারে। আমাদের কাছে বেশকিছু ইন্টেলিজেন্স তথ্য রয়েছে। তার ভিত্তিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

যতক্ষণ পর্যন্ত এই এলাকাটিকে আমরা পরিপূর্ণ নিরাপদ মনে না করবো ততক্ষণ পর্যন্ত এই এলাকায় যানচলাচল, জনসাধারণের চলাচল বন্ধ থাকবে। আমরা কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে আটকাচ্ছি না। একান্ত জরুরি সেবার মানুষ, বিদেশগামী, অফিসগামী, হাসপাতালগামী মানুষদেরকে ছেড়ে দিচ্ছি। তবে এখানে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার কোনো অবকাশ নেই।  

বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে ডিএমপির পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলীয় কার্যালয় ছাড়াও এখানে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস, বাসা-বাড়ি রয়েছে। তাদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা বিধান করা পুলিশের পবিত্র দায়িত্ব। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য যা যা প্রয়োজন পুলিশের পক্ষ থেকে তাই করা হবে।  

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজ বা কাল, গ্রেফতারের বিষয়টি চলমান প্রক্রিয়া। তবে জোর দিয়ে বলছি, যে বা যারাই নাশকতার চেষ্টা করবে, জনসাধারণকে হুমকির মুখে ফেলবে, সাধারণ মানুষের শান্তি বিঘ্নিত করার প্রচেষ্টা চালাবে তাদের বিন্দু মাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।

সমাবেশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ডিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, এটা ভিন্ন প্রসঙ্গ৷ যারা সমাবেশের আয়োজন করেছেন তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। জনসাধারণের চলাচল বিঘ্নিত হয় এমন কোনো স্থানে সমাবেশের অনুমতি দেবে না ডিএমপি।  

মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকগুলো মামলার প্রক্রিয়া চলছে, বিস্ফোরক, নাশকতার চেষ্টা, পুলিশের ওপর হামলাসহ অনেকগুলো ধারায় মামলা হচ্ছে। গ্রেফতারদের সেসব মামলায় আদালতে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২২
পিএম/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।