ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে পৌষের আগে নামছে না হাড় কাঁপানো শীত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২২
রাজশাহীতে পৌষের আগে নামছে না হাড় কাঁপানো শীত

রাজশাহী: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অগ্রহায়ণেও বিরূপ আচরণ করছে প্রকৃতি। এই সময় শীত না পড়লেও গরমের অনুভূতি তেমন থাকে না।

তবে প্রকৃতিতে এখনও রয়েছে রৌদ্রের প্রখরতা। তাই দিনে অনুভূত হচ্ছে গরম। আর রাতে ঠান্ডা।  

সূর্যাস্তের পর ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করায় কাঁটা দিয়ে উঠছে শীতার্ত শরীরে। ভোরেও বিরাজ করছে একই অবস্থা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে- এভাবেই কাটবে অগ্রহায়ণের শেষ দিনগুলো। পৌষের আগে দেখা মিলছে না সেই কাঙ্ক্ষিত শীতের।

রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৩৬ মিনিটে। ভোরে হালকা কুয়াশা থাকলেও সকাল থেকেই দেখা গেছে সূর্যের মুখ। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বয়ে যায় ঠান্ডা বাতাস। বাতাসের দাপটে কাবু হয়ে পড়ে পদ্মাপাড়ের মানুষ। বিশেষ করে পথের ধারে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলো শীতে গুটিসুটি হয়ে পড়ে। কিন্তু বেলা ১১টা হতেই রোদের প্রখরতা বাড়তে থাকে।  

এতে খুব গরম না থাকলেও শরীরে থাকা সকালের শীতের পোশাক খুলতে হয়েছে সবাইকেই। তবে বিকেলে পশ্চিমাকাশে সূর্য ঢলতেই আবারও বইতে শুরু করে ঠান্ডা বাতাস। আর যে কারণে আবারও গরম কাপড় ওঠে শরীরে। এভাবেই এখন অগ্রহায়ণের শেষ সময় পার করছে রাজশাহীর মানুষ। শীত যেন আসি আসি করেও আসছে না। ফলে ঘরে ঘরে জ্বর ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে নানা বয়সের মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরাই এখন ঠান্ডাজনিত অসুখ-বিসুখে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, সর্বশেষ গত ২২ নভেম্বর রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এরপর গত ৩ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তারপর আর এত নিচে নামেনি।  

আজ বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সর্বোচ্চ ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে গেল বছরের এই সময়ের চেয়ে চলতি বছরের এই সময়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও নিচে বলেও জানান এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।

এক প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া কর্মকর্তা আব্দুস সালাম পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই বছরের ৬ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই বছর ৭ ডিসেম্বর রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বর রাজশাহী সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই বছরের ৮ ডিসেম্বর অর্থাৎ আজ বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাধারণত পৌষের প্রথম সপ্তাহ (মধ্য ডিসেম্বর) থেকে রাজশাহীতে তাপমাত্রা নামতে শুরু করে। এটি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে গিয়ে এক অঙ্কে গিয়ে দাঁড়ায়। তাই শীতের জন্য এখনো পৌষ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের এই কর্মকর্তা।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) কামাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। তবে সেই হাড় কাঁপানো শীত এখনই নামছে না। এর জন্য সবাইকে মধ্য ডিসেম্বর পার করতে হবে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এবং আগামী জানুয়ারির শুরুতে রাজশাহীসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। তাই এই মাসে রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকবে। এই মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু (০৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ও মাঝারি (০৬-০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আর শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে বলেও পূর্বাভাস রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২২

এসএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।