ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিশ্বকাপের সময়ে জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষার আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২২
বিশ্বকাপের সময়ে জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষার আহ্বান

বরিশাল: বিজয়ের মাসে ও ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালীন জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন বরিশালের বীর মুক্তিযোদ্ধারা।  

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় নগরের আমতলা মোড়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য বিজয় বিহঙ্গ পাদদেশে অনুষ্ঠিত বরিশাল মুক্ত দিবস অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে এদিন দিবস পালন করেন উদীচী, বরিশাল নাটক, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ ও উত্তরণের শিল্পীকর্মীরা।  

জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করার পর বক্তার বলেন, বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা উপলক্ষে সারা দেশে বিভিন্ন দেশের পতাকা উত্তোলনের প্রতিযোগিতা চলছে। সেখানে আমাদের লাল-সবুজের পতাকা স্থান পাচ্ছে না। দুই একটি স্থানে জাতীয় পতাকা দেখা গেলেও তা এতো ক্ষুদ্র চোখেই পড়ে না। এটা আমাদের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা। যে সব দেশের পতাকা উড়ছে তাদের, ভাষা সংস্কৃতি কোনটার সঙ্গেই আমাদের সেরকম সখ্য নেই। তাছাড়া ফুটবল বিশ্বকাপে আমাদের অংশগ্রহণও নেই। অন্যদিকে ক্রিকেট খেলায় বাংলাদেশের বিজয়ের পরও আমাদের মিছিল নেই। অথচ ফুটবল বিশ্বকাপে দুটি দেশে জিতলেই রাস্তায় সেই দেশের পতাকাসহ হাজার হাজার তরুণ-তরুণীদের উন্মাদনা চোখে পড়ে। ফুটবল বিশ্বকাপে যে কোন দেশের সমর্থন থাকতেই পারে। সেটা যেন নিজের দেশ ও পতাকে অবমাননা করে না হয়। রক্তস্নাত বাংলাদেশের পতাকার মর্যাদা রক্ষার জন্য সরকারসহ সবার উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

বরিশাল মুক্ত দিবসের স্মৃতিচারণ করে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের আগেই বরিশাল পাক হানাদার মুক্ত হয়। ওইদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গানবোট কীর্তনখোলায় ডুবিয়ে দেওয়া হয়। নগরবাসী বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়ে। বিজয় অর্জিত হলেও আমাদের অর্জন ম্লান করে দেওয়ার চেষ্টা থেমে নেই। একাত্তরের পরাজিত শক্তি নানা মোড়কে মাথাচারা দিয়ে উঠছে। তারা আমাদের ঐতিহ্য ধ্বংস করার জন্য নতুন ফতোয়া জারি করছে।

তারা আরও বলেন, বিজয়ের ৫০ বছর পরও নানান কৌশলে সরকারের ভেতরে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ঘাপটি মেরে বসে আছে। এই গোষ্ঠী আমাদের পাঠ্য বই এবং কারিকুলাম পরিবর্তন করে ফেলেছে। তারা আমাদের ভাস্কর্য ভাঙার ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে। এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। আমাদের আবারও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। তাই যতদিন পর্যন্ত একজন রাজাকার থাকবে ততোদিন মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রাম চলবে।

উদীচী বরিশালের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কেএসএ মহিউদ্দিন মানিক (বীর প্রতীক), আবদুর রব হাওলাদার, বরিশাল নাটকের সভাপতি কাজল ঘোষ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আজমল হোসেন লাবু, উদীচীর সহসভাপতি, কাজী সেলিনা, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ বরিশাল শাখার সাধারণ সম্পাদক সুখেন্দু সরকার, বরিশাল নাটকের সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথি, উত্তরণের সভাপতি মো. শাকিল আহম্মেদসহ অন্যরা।

আলোচনা সভা শেষে আবৃত্তি পরিবেশন করে সুজয় সেন গুপ্ত, জিয়াউর রহমান,আশরাফুর রহমান সারগ, মাহফুজা মুনা, রাখী শায়ন্তনী, মুনিয়া রহামন রচি। বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে বরিশাল নাটক পরিচালিত আবৃত্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রাথমিক বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২২
এসএম/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।