ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এক বিশেষজ্ঞে চলে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২২
এক বিশেষজ্ঞে চলে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের। কিন্তু আছেন মাত্র একজন।

বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানটিতে জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত রোগীর অস্ত্রোপচার হয় না। তাই অবহেলায় পড়ে আছে মূল্যবান চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, নষ্ট হচ্ছে। আছে জনবল সংকট। কিন্তু তারপরও একাধিকবার জাতীয় পর্যায়ে উপজেলার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটি শ্রেষ্ঠ হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে।

৩১ শয্যা বিশিষ্ট কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৪ সালে। উপজেলার প্রায় দেড় লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের জন্য ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। শয্যার সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি পরিমিত চিকিৎসা সেবা। আগের ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। জরুরি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জনবল না থাকায় প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা পান না হাসপাতালের আউটডোরে আসা রোগীরা। জানা গেছে, আউট ডোরে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ রোগী আসেন, ভর্তি থাকেন ৮০ জন।

হাসপাতালে শিশু বিভাগ থাকলেও সংশ্লিষ্ট কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। লাইনের পর লাইন ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে সেবা নিতে হয় গর্ভবতী নারীদের। হাসপাতালে ওষুধ পাওয়া যায় না। আনতে হয় বাইরের ফার্মেসি থেকে।

কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মেহনাজ মুশতারী। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে কোনো জটিল রোগের অপারেশন না হওয়ায় মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। এভাবে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। অন্য পদে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় গাইনি চিকিৎসা পাশাপাশি আমাকেই সব ধরণের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। যে কারণে অনেক সময় রোগীদের চাপ সামলাতে আমাকে হিমশিম খেতে হয়।

এ ব্যাপারে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফয়সাল নাহিদ বলেন, ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এটি এখনও ৩০ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে। তারপরও আমাদের স্টাফদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি একাধিক বার জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। এটি অনেকাংশে আমাদের অর্জন।

এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ আলী বলেন, শুধু কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সই নয়, অন্যান্য গুলোরও একই অবস্থা। শুন্যপদ সৃষ্টিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বার বার বলা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, আগামী ৭-৮ মাসের মধ্যেই কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ সবগুলোয় চিকিৎসক ও অন্যান্য পদ পূরণ হবে।

উল্লেখ্য, কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ১৪০ পদের বিপরীতে ৯৭টি পদে জনবল রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একজন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক একজন, মেডিকেল অফিসার ১০ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ৮৫ জন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, ৯ ডিসেম্বর, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।