ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুনি জিয়ার লাশ সংসদের পবিত্র আঙিনায় নেই: মোজাম্মেল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২২
খুনি জিয়ার লাশ সংসদের পবিত্র আঙিনায় নেই: মোজাম্মেল

কুমিল্লা: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে খুনি উল্লেখ করে তার লাশ জাতীয় সংসদের পবিত্র আঙিনায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে কুমিল্লার টাউন হল মাঠে মায়ের কান্না নামে একটি সংগঠন আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ১৯৭৭ সালে গুম, হত্যা ও বিচার বহির্ভূত ফাঁসির শিকার মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন বাহিনীতে কর্মরত নিহতদের স্বজনরা।  

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি, জাতীয় চার নেতা, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর সদস্যদের খুনি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার বাংলার মাটিতে হবেই হবে। এই খুনির কবর জাতীয় সংসদের পবিত্র আঙিনায় থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, আমি জাতীয় সংসদেও বলেছি, খুনি জিয়াউর রহমানের লাশ সেখানে নেই। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে তার কবর আছে বা তার লাশ সেখানেই কবর দেওয়া হয়েছে, তাহলে কোনো কথাই বলব না। তাদের কথা মেনে নেব। কিসের না কিসের লাশ, নাকি অন্য কিছু রেখে জিয়ার কবর বলে চালাচ্ছে। আর যারা ওই জিয়ার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা তো আর মানুষ ফেরত দিতে পারব না, তারা যেন খেয়ে পরে বাঁচতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

এ বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আজকে বিদেশি প্রভুদের মদদে যারা দিবা স্বপ্ন দেখছেন, তাদের বলছি- বাংলার জনগণ যারা আমরা পাক বাহিনীকে পরাজিত করে এই ডিসেম্বর মাসে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছিলাম, তারা এখনও জীবিত আছি। যারা বিদেশি প্রভুদের ইঙ্গিতে চলছে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের দলের রাজনৈতিক কবর এই বাংলার মাটিতেই হবেই হবে।

তিনি আরও বলেন, আবার দেশকে পাকিস্তান বানানোর জন্য তারা (বিএনপি) ১০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছে। পারে নাই, ওই খুনিরা পারে নাই। তারা পারবেও না। শুনেছেন কীভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের, বিমানবাহিনীর সদস্যদের বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছিল। গুমও করা হয়েছিল। তাদের লাশও পাওয়া যায় নাই। কে কোথায় আছে সেই খবরও নেই। এই গুমের রাজনীতি শুরু করেছিল খুনি জিয়া। জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, আর খালেদা ও জিয়া তারেক জিয়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। সেদিন আমাদের নেত্রী বেঁচে গেলেও আমাদের আরেক নেত্রী আইভি রহমান বাঁচতে পারেননি।  

জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের সময় যারা ভেটো দিয়েছিল, নগদ পয়সায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে চাল এবং গম কিনেছিল আমেরিকার কাছ থেকে সেই চাল ও গম বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় নাই। কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ তৈরি করেছিল। তারা আবার হুমকি দিচ্ছে সরকারের পতন ঘটাবে! এটা ১৯৭৫ নয়, এটা ২০২২ সাল। সেই কথা ভুলে যান। সেই চিন্তা আর করবেন না। তারা (বিএনপি) বলে ১০ তারিখে শেখ হাসিনা সরকার থাকবে না। তাহলে কে দেশ চালাবে? আমরা বুঝি কাদের মদদে এগুলো চলে। তাদের লোভ হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুকে খুন করে তারা ক্ষমতায় এসেছে। ভেবেছে বার বার একই পথে এসে পার পেয়ে যাবে, কিন্তু সেটা আর সম্ভব নয়।  

এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ও মায়ের কান্না সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ১৯৭৫ সালে ৭ নভেম্বর শহীদ কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে নাহিদ এজাহার খান। এ ছাড়া কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাত, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ বীর বিক্রম, দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান, কর্পোরাল লরেন্স ডি রোজারিও প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২২
এসএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।