ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পিডিবিএফ এমডির নামে দুর্নীতির অভিযোগ চাকরিচ্যুতদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
পিডিবিএফ এমডির নামে দুর্নীতির অভিযোগ চাকরিচ্যুতদের

ঢাকা: পল্লী দারিদ্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিবিএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মওদুদউর রশিদ সফদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সরকারি প্রকল্পের অর্থ তছরুপ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

এ সময় পিডিবিএফ এমডির বিচার, চাকরি থেকে অপসারণ ও চাকরিচ্যুত কর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানান প্রতিষ্ঠানটির চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাশাপাশি পিডিবিএফ এমডির দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য ও দলিলপত্র উপস্থাপন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পিডিববএফের চাকরিচ্যুত মাঠকর্মী শোহাদা নাফছিল।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের দায়িত্বপাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে গত ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক একটি প্রবিধানমালার মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ প্রক্রিয়ায় অর্থাৎ প্রবিধানমালা গেজেট আকারে প্রকাশের আগেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে মউদুদউর রশিদ সফদারকে পিডিবিএফের এমডি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এমডি নিয়োগ ও চাকরি প্রবিধানমালা-০১/২০২০ অনুযায়ী গত ২৪/০৮/২০২২ তারিখ সফদারের বয়স ৬২ বছর অতিক্রান্ত হওয়ায় বিধি অনুযায়ী ২৫/০৮/২০২২ তারিখ হতে তিনি অবৈধভাবে পিডিবিএফের এমডি হিসেবে চাকরি করছেন। অবৈধভাবে চাকরি করায় পিডিবিএফের সাবেক কর্মী রুবেল হাওলাদার এমডি সফদারের চাকরির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করেন। হাইকোর্ট সফদারের চাকরির বৈধতার বিষয়ে রুল জারি করেন এবং সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনকে (পিডিবিএফ) ২ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে আদেশ দেন। কাজেই সফদারের চাকরির বৈধতা এখন আদালতের বিচারাধীন বিষয়। এমতাবস্থায় রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মউদুদউর রশিদের পিডিবিএফের এমডি পদে অধিষ্ঠিত থাকা সম্পূর্ণ বে-আইনি। কাজেই তিনি আইনত কোনো বোর্ড সভা ডাকতে পারেন না এবং সর্বোপরি রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার চাকরি বোর্ড কর্তৃক নবায়নেরও কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, গত ২ বছরে সফদারের পৃষ্ঠপোষকতায় স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের আধিপত্য বিস্তার, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কতিপয় কর্মকর্তার দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি, একাধিক কর্মচারী ইউনিয়নের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব, অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় দুই বার চাকরিচ্যুত এক অর্থলোভী কর্মকর্তাকে ব্যবহার এবং সহকর্মীদের সঙ্গে দ্বৈতনীতির চর্চা ও হিপোক্রেসির কারণে প্রতিষ্ঠানটির আজ বন্দিদশা। বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, দুর্নীতি ও নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ঋণ কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে মাঠ কার্যক্রম মনিটরিং ও তদারকি। গত ২ বছরে অবসরে যাওয়া একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও তাদের পাওনাদি দেওয়া হয়নি।

চাকরিচ্যুত এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মউদুদউর রশীদ সফদারের অপেশাদার মনোভাবাপন্ন ও মাইক্রোফাইন্যান্স কার্যক্রম বাস্তবায়নে অনভিজ্ঞ ব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিষ্ঠানটিকে গ্রাস করে ফেলেছে। তার এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় প্রায় ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। চাকরিচ্যুত করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদেরও। সফদারের অপশাসন, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও অদূরদর্শিতার কারণে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মী ও প্রায় সাড়ে ১১ লাখ সুফলভোগী পরিবার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে দুটি শ্বেতপত্র এবং একাধিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পিডিবিএফের দারিদ্র বিমোচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান ও মাঠ কর্মকর্তা তানভীর আহমেদসহ চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
এসসি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।