ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আধঘণ্টা আগেই মেট্রোস্টেশনের গেট বন্ধ, বিপাকে যাত্রীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
আধঘণ্টা আগেই মেট্রোস্টেশনের গেট বন্ধ, বিপাকে যাত্রীরা

ঢাকা: আগামী ২৬ মার্চ (২০২৩) পর্যন্ত মেট্রোরেলে ভ্রমণের জন্য নির্ধারিত সময় ছিল সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এসময়ের মধ্যে যাত্রীরা মেট্রোতে ভ্রমণ করার সুযোগ পাবেন।

কিন্ত তৃতীয় দিন শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বেলা সাড়ে ১১টায় উত্তরা মেট্রোস্টেশনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।   যে কারণে অনেক  যাত্রী স্টেশনের বাইরে আটকা পড়েন। তাদের মধ্যে স্থায়ী কার্ডধারীরাও ছিলেন।

যদিও যাদের স্থায়ী কার্ড আছে তাদের স্টেশনের বাইরে লাইন দেওয়ার প্রয়োজন নেই, সরারসরি প্লাট ফর্মে চলে যেতে পারবেন কোনো বাধা ছাড়াই- এমনটাই জানিয়েছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এ নির্দেশনার কোনো তোয়াক্কাই করা হচ্ছে না উত্তরা দিয়াবাড়ি স্টেশনে।

স্টেশন কর্তৃপক্ষ আধঘণ্টা আগেই প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়ায় কার্ডধারী যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। ফলে বেশির ভাগ সাধারণ যাত্রী এবং কার্ডধারীরা গেটের বাইরে  ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন।

শনিবার সকাল সাড়ে এগারটায় দিয়াবাড়ি মেট্রোস্টেশনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

আবু-আল আসমা অসুস্থ মাকে নিয়ে শ্যামলী হার্ট ফাউন্ডেশনে যাবেন। এজন্য পরিবারের ৬ সদস্যকে নিয়ে উত্তরা মেট্রোস্টেশনে আসেন আগারগাঁও যাবার উদ্দেশ্যে। অসুস্থ মাকে সঙ্গে নিয়ে চারজন লিফটে উঠে যান। কিন্তু বাকি দুই জনের কার্ড থাকা সত্ত্বেও সাড়ে ১১টা বেজে যাওয়ায় তারা স্টেশনে ঢুকতে পারছিলেন না। কারণ তারা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

এ অবস্থায় আসমা বেগম বারবার অনুরোধ করার পরও গেটে দায়িত্বে থাকা পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা তার দুই ভাইকে স্টেশনে ঢুকতে দেয়নি।

এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আসমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আমার পরিবারের সব সদস্যের কাছে স্থায়ী কার্ড আছে। কিন্তু আমাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই স্টেশনে এসেছি। এ পর্যন্ত চার থেকে পাঁচ বারের বেশি সিঁড়ি বেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে যেয়ে  অনুরোধ করি আমার সঙ্গের দুই জনকে ঢুকতে দেওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, অসুস্থ মাকে উপরে বসিয়ে রেখেছি। বিশ্বাস না হলে আপনারা সিসি ক্যামেরা চেক করেন যে, কখন আমরা স্টেশনে এসেছি। কয়েকবার উপরে নিচে গিয়ে অনুরোধ করলাম। একজন বলে এদিকে যান, অন্যজন বলে এখানে হবেনা অন্যদিকে যান। তারা কেউ কোনো জবাব দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় তো সাধারণ যাত্রীরা বিপাকে পড়বে।

মেট্রো যাত্রার তৃতীয় দিনে সকালে স্টেশন খোলার আগ পর্যন্ত যাত্রীদের ভিড় ছিল একেবারেই সামান্য। এমনকি টিকিট কাটার ভেন্ডার মেশিন এবং টিকিট কাউন্টারগুলোর সামনেও ছিল তুলনামূলক কম ভিড়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। বেলা সাড়ে ১০টা থেকে যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাইরে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ লাইনের। ফলে স্টেশনে ভেতরে যাতে চাপ বেশি না হয় সে জন্য গেটে দ্বায়িত্বরতরা অল্প অল্প করে লোক স্টেশনে ঢুকতে দেয়।

নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশনে এসেও ঢুকতে পারেননি আরেক যাত্রী মোসাদ্দেক হোসেন। তিনি আগারগাঁও আবহাওয়া অফিসে চাকরি করেন। সাড়ে এগারোটা বেজে যাওয়ায় কার্ড থাকার পরও তিনি স্টেশনে ঢুকতে পারেননি। অথচ তার সঙ্গে আসা অন্য যাত্রীরা সে সময় প্লাট ফর্মে ছিল। তিনি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কিছু সময়ের জন্য স্টেশন থেকে বের হন। ফলে তাকে ছাড়াই বাকিদের আগারগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হয়। গেটে তালা থাকায় সদস্যদের বের হবারও উপায় ছিল না।

আবহাওয়া কর্মকর্তা মোসাদ্দেক বাংলানিউজকে বলেন, মেট্রো কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সিদ্ধান্ত বদলানো প্রয়োজন। তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য ভাল হবে। নিয়ম কানুন অনেকে বোঝেন না। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের বোঝানোর মন মানসিকতা থাকা দরকার।

এবিষয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তাদের কেউ কোনো মন্তব্য করেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেট্রোর এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে সাড়ে ১১টায় গেট বন্ধ করার জন্য। সে অনুযায়ী গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। মূলত কাউন্টার এরিয়াতে লোক বেশি থাকায় আমরা আগে থেকেই গেট বন্ধ রাখি। অল্প অল্প করে লোক স্টেশনে প্রবেশ ঢুকতে দেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
ইএসএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।