ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মনোহরদীতে ঘোড়দৌড় দেখতে হাজারো মানুষের ঢল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
মনোহরদীতে ঘোড়দৌড় দেখতে হাজারো মানুষের ঢল

নরসিংদী: নরসিংদীর মনোহরদীতে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলা ‘ঘোড়দৌড়’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের রুদ্রদী শ্যামল মাঠে রুদ্রদী যুবসমাজের উদ্যোগে এ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

গ্রামের ধানক্ষেতই যেন খেলার মাঠ। মাঠের মধ্যে বাঁশের খুঁটি পুঁতে একটি জায়গা চিহ্নিত করা। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ও আশপাশের গ্রাম থেকে মাঠে আসতে শুরু করে স্থানীয় লোকজন। খেলা শুরুর আগেই শ্যামল মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়। দুপুরের পরপরই প্রতিযোগিতা শুরু হয়, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে হাজারো নারী-পুরুষ, বৃদ্ধরা এসে জড়ো হয় ঘোড়দৌড় উপভোগ করতে।  

শীতের পড়ন্ত বিকেলে প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বী ঘোড়াগুলো মাঠের পূর্ব প্রান্ত থেকে পশ্চিম প্রান্তে ছুটতে প্রাণপণে। ঘোড়ার গতি বাড়াতে পিঠে বসানো হচ্ছে চাবুকের ঘা। উপস্থিত দর্শকেরা হর্ষধ্বনি ও তালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে সওয়ারিদের। প্রতিযোগিতায় নরসিংদী, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল থেকে ১৯টি ঘোড়া অংশ নেয়। ঘোড়ার সওয়ার হিসেবে ছিলো বিভিন্ন বয়সের শিশুরা।

ঘোড়দৌড় দুইটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বড় গ্রুপে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ইসমাইল হোসেনের ঘোড়া প্রথম, একই উপজেলার সোহানের ঘোড়া দ্বিতীয় এবং আব্দুল জব্বারের ঘোড়া তৃতীয় স্থান অধিকার করে। আর ছোট গ্রুপে প্রথম হয়েছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার সুজনের ঘোড়া, শিবপুর উপজেলার শামসুল আলমের ঘোড়া দ্বিতীয় এবং কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সবুজ বাংলা ঘোড়া তৃতীয় স্থান অধিকার করে।

বড় গ্রুপে প্রথম পুরস্কার হিসেবে একটি ফ্রিজ, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে একটি এলইডি টেলিভিশন এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে একটি মুঠোফোন দেওয়া হয়। আর ছোট গ্রুপে প্রথম পুরস্কার হিসেবে একটি ঘোড়া, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে একটি এলইডি টেলিভিশন এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় একটি মুঠোফোন।

প্রতিযোগিতায় বড় গ্রুপে প্রথম গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ঘোড়দৌড়ে অংশ নিচ্ছি। যেখানে ঘোড়া দৌড়ের খবর পাই সেখানেই ছুটে যাই। আয়োজকরাও খবর দেন। এটা আমার একটা শখ।

ঘোড়দৌড় দেখতে আসা দর্শক শাওন বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা ঘোড়দৌড়। আগে বিভিন্নস্থানে খেলাগুলো দেখা যেতো। কিন্তু এখন সচরাচর আর দেখা যায় না। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে। শুধু ঘোড়াদৌড় না আরও যেসব গ্রামীণ খেলা আছে সেগুলোও নিয়মিত আয়োজন করা প্রয়োজন। এতে করে নতুন প্রজন্ম আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে।

প্রতিযোগিতার আয়োজকরা জানায়, ‘ঘোড়দৌড় হচ্ছে গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে এই গ্রামে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা চলে আসছে। প্রতি বছর এ প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। ’

প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান রহিম। প্রধান অতিথি ছিলেন কাচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন খান কনক। উদ্বোধন করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মোবারক হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।