ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হলুদ আভা ছড়াচ্ছে দিগন্ত জোড়া সরিষা ক্ষেত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৩
হলুদ আভা ছড়াচ্ছে দিগন্ত জোড়া সরিষা ক্ষেত

নীলফামারী: উত্তরের জেলা নীলফামারীর ৬টি উপজেলায় হলুদ আভা ছড়াচ্ছে দিগন্ত জোড়া সরিষা ক্ষেত। মাঠে শোভা পাচ্ছে হলুদের সমারোহ।

দেখলেই মন ও চোখ জুড়িয়ে আসে। কুয়াশা উপেক্ষা করে ক্ষেত পরিচর্যা করছেন চাষিরা। অন্যান্য ফসলে সে রকম দাম না পাওয়ায় এবার সরিষা চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা।

জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, আমন ছাড়াও জমি থেকে সরিষা ওঠার পর ওই জমিতে প্রচুর বোরোর আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায় ও বোরোর ফলন ভালো হয়। এ বছর অধিক (উচ্চ) ফলনশীল আগাম জাতের সরিষার চাষ করছেন চাষিরা। এর মধ্যে বারি-১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ জাত চাষে কৃষক মাত্র ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় দেড় হাজার কেজি (প্রায় সাড়ে ৩৭ মণ)। তবে স্থানীয় জাত টরি-৭ এর ফলন কম হয়, উৎপাদনের সময়ও লাগে বেশি। এ জন্য চাষ কমিয়ে দিয়েছেন অনেকে। বারি জাত ছাড়াও বিনা-৪, ৯ ও ১৭ জাতের সরিষার ফলন ভালো হয়। এরপর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা বীজ উদ্ভাবন করায় বর্তমানে চাষের পরিমাণ বেড়েছে। এর মধ্যে বারি-১৪, ১৫, বিনা-৯/১৭, ৪ ও সোনালী সরিষা (এসএস-৭৫) উল্লেখযোগ্য।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এ পর্যন্ত অর্জিত জমির পরিমাণ হলো- ৫ হাজার ৫৫৫ হেক্টর। এর মধ্যে সদরে দুই হাজার ৫৪৫ হেক্টর, সৈয়দপুর ২৭৫, ডোমার ৪৯০, ডিমলা ৮২০, জলঢাকা ৮৪৫ ও কিশোগঞ্জ উপজেলায় ৫৮০ হেক্টর। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৮৬০ মেট্রিক টন।

এই ফসল চাষে খরচ কম এবং লাভ বেশি। এতে সেচ দিলেও চলে, না দিলেও ফসল কমে না। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ সরিষার দাম এক হাজার ৮০০ থেকে এক হাজার ৯৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

কৃষকরা জানায়, এক বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে (হাল, বীজ, সার) খরচ হয় দুই হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এতে অনেক লাভ হয়। এক বিঘা জমিতে সাত থেকে আট মণ সরিষা পাওয়া যায়। প্রতি মণ এক হাজার ৯০০ টাকা দরে আট মণের দাম দাঁড়ায় ১৫ হাজার ২০০ টাকা। আর বিঘায় খরচ বাদে লাভ হয় ১২ হাজার ৭০০ টাকা। পাশাপাশি নিজেদের তেলের চাহিদাও পূরণ হয়।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা বেগম বলেন, বাজারে সয়াবিনসহ অন্যান্য ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গত মৌসুমে সরিষার ব্যাপক চাহিদা ছিল। এবারও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছে ফলন ভালো হবে। সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল। সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদের অর্জন বেশি হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে অধিক ফলন পেতে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আশা করি, ভালো ফলন ও বাজারে ভালো দাম পেলে কৃষকরা লাভবান হবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২২
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।