রাজশাহী: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ধর্মীয় সম্প্রীতিতে বাংলাদেশ একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভঙ্গুর অবস্থা।
শনিবার (০৭ জানুয়ারি) রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সম্প্রীতি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক ও সামাজিক বন্ধনকে সুসংহত রাখা, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধনকে এগিয়ে নিতে ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে এই সম্প্রীতি সমাবেশ আয়োজিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট পাকিস্তান ও ১৬ আগস্ট ভারত স্বাধীন হয়েছিল। ওই সময়ে দুই দেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে একটি ধর্মীয় অসম্প্রীতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দেশে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধসহ সব সময় মানুষের মধ্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি অটুট ছিল। আমরা সারা পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছি একসঙ্গে একসঙ্গে কীভাবে থাকতে হয়।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ধর্ম কখনো রাজনীতির হাতিয়ার হতে পারে না। সরকারি কোনো ক্ষেত্রে ধর্মের বিপক্ষে কাজ হয় না। আমরা যারা দেশের জন্য কাজ করি, তারা কেউ ধর্মের বিরোধিতা করি না।
তিনি বলেন, সম্প্রীতি মানে শুধু ধর্ম নয়, এর সঙ্গে সামাজিকতাও জড়িয়ে আছে। আমাদের সামনে এগোতে হলে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে, ভাই-ভাই সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। সবাই সমানভাবে কাজ না করলে দেশ এগোবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে শত বাধা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে স্বাবলম্বী করা এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। যেখানে এক সময় বিশ্বে ৫টি গরিব দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ছিল একটি, সেখানে চারিদিকে এত উন্নয়ন এটা আপনা-আপনি হয়নি। এখন ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে আমাদের জিডিপি বেশি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ধনী দেশ হবে।
সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা অনেক ভালো আছি, এটা অনেকে সহ্য করতে পারে না। গত ১৪ বছরে আমাদের দেশের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগামীতে আমরা আরও অনেক দূর যেতে চাই। স্বাধীনতার পর জাতীয় জীবনের ৫২ বছর সম্প্রীতি নিয়ে চলেছি। বাকি সময়ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে চলার আশা প্রকাশ করে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, পৌর মেয়র একরামুল হক। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তা, রাজনৈতিক, এনজিও প্রতিনিধি, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, পুরোহিতসহ বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান অংশগ্রহণ করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বাস্তবায়নাধীন ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত অর্থ দ্বারা চারঘাট উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষাবৃত্তি হিসাবে মোট ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ টাকা দেওয়া হয়।
এর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ১৫ জন শিক্ষার্থীকে ২ হাজার ৪০০ টাকা করে, মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৫ জন শিক্ষার্থীকে ৬ হাজার টাকা করে, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে দুই জন শিক্ষার্থীকে ৯ হাজার টাকা এবং পাঁচ জন ছাত্রীর হাতে পাঁচটি বাইসাইকেল তুলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৩
এসএস/এমজেএফ