হবিগঞ্জ: ইউরোপ যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মারা যাওয়া চুনারুঘাটের রিপন মিয়ার (৩৯) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বাদ জুমা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, গত বছরের ৩১ অক্টোবর দালালের মাধ্যমে আলজেরিয়ার ওরান থেকে রাতে স্পিডবোটে করে অন্যান্য দেশের আরও ১৮ জনের সঙ্গে রিপন মিয়া রওনা হন স্পেনের উদ্দেশ্যে। উত্তাল ভূমধ্যসাগরে ছয় ঘণ্টার যাত্রা শেষে যখন স্পেন উপকূল দৃষ্টিসীমায় আসে তখন নৌকা থেকে তারা লাফিয়ে পড়েন। এতে তাৎক্ষণিক সাগরে ডুবে মারা যান রিপন মিয়া ও মরক্কোর এক নাগরিক। আর বাকি ১৬ জন স্পেনের আলমেরিয়ায় পৌঁছান। তাদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি।
রিপন মিয়ার স্বপ্ন ছিল ইউরোপে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত হবেন। এরপর দেশে ফিরে স্ত্রী-সন্তান ও বাবা-মাকে নিয়ে সংসারের হাল ধরবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হবে না কোনদিন। চিরতরে নিভে গেছে প্রাণপ্রদীপ। সেই রিপন মিয়া ফিরছেন দেশে। তবে জীবিত নয়, কফিনবন্দি হয়ে।
স্থানীয়রা জানান, পুলিশের চাকরি ছেড়ে অন্তঃস্বত্বা স্ত্রী, চার বছরের এক ছেলে ও মা-বাবাকে রেখে তিনি ইউরোপের পথ ধরেন। গত বছরের ৪ নভেম্বর রিপন মারা যাওয়ার খবর পান তার বাবা সাবু মিয়া। সেদিনই রিপনের অন্তঃস্বত্বা স্ত্রীর কোলজুড়ে আসে তার দ্বিতীয় সন্তান রিয়ান। সন্তানের আনন্দ ছাপিয়ে স্বামীর মৃত্যু সংবাদে তিনি ভেঙে পড়েন। সন্তানের বয়স দুমাস পূর্ণ হয় ৪ জানুয়ারি, পরদিন ৫ জানুয়ারি বাড়িতে আসে তার বাবার মরদেহ। অবুঝ শিশু রিয়ান আর চার বছরের আরেক সন্তান ইমন কিছু না বোঝার আগেই তাদের বাবাকে বিদায় দিতে হয়েছে।
এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এভাবে অবৈধ পথে দালালের মাধ্যমে বিদেশে না যাওয়ার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৩
এমএমজেড