ফরিদপুর: এ বছর দেশজুড়ে শীতের তীব্রতা ব্যাপক। অন্যান্য জেলার মতো ঢাকা বিভাগীয় জেলাগুলোয় শীত অনুভূত হচ্ছে অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় অত্যধিক।
চলতি মৌসুমে ফরিদপুরে সবচেয়ে কম তাপমাত্রার রেকর্ড এটি। তীব্র শীতে জেলায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মানুষের সারি লম্বা হচ্ছে। জ্বর, হাঁচি-কাশির পাশাপাশি নিউমোনিয়া, কোল্ড অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বাড়ছে।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. গণেশ কুমার আগরওয়ালা বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর শীত অনেক বেশি। শীতের কারণে বিভিন্ন রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোয় রোগীর চাপও অনেক। প্রতিদিনই এক-দেড়শ রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এবার ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কম। তবে অন্যান্য রোগে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাজ সেবা দেওয়া। এখন পর্যন্ত যারা হাসপাতালে আসছেন, ভর্তি হচ্ছেন আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সেবা তাদের নিশ্চিত করতে কাজ করছি।
শীতের রোগ থেকে বাঁচতে বিভিন্ন পরামর্শও দেন ডাক্তার গণেশ। তিনি বলেন, শিশু বা বয়স্ক থেকে শুরু করে সবাইকে শীতের ঠাণ্ডা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। গরম কাপড় পরা, কান ও হাত ঢেকে রাখতে হবে। ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করা চলবে না। এ ক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। খাবার পানিও কুসুম গরম করে পান করা জরুরি। বাইরে ধোঁয়া বা ধুলা এড়িয়ে চলতে হবে।
শিশুদের কাপড়ের দিকে বিশেষ নজর দিতেও পরামর্শ দিয়েছেন এ চিকিৎসক। নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি জলপাই, কমলা, লেবু খাওয়ার কথাও বলেন তিনি।
ফরিদপুরে এবার যে শীত অনুভূত হচ্ছে সেটি আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা নেমে আসে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রিতে। এ অবস্থায় স্থানীয়দের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।
জেলা আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে, ফরিদপুরে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বইছে। হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকছে। ঘন কুয়াশায় দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কে যানবাহনের হেডলাইট জ্বালিয়ে চালাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত কয়েক দিন ধরে ফরিদপুরের তাপমাত্রা কিছুটা ওঠানামা করছে। গত শনিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি। সেটি ভেঙে আজ রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীতে সরিষা, ভুট্টা, গমসহ কৃষি ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে প্রান্তিক জীব যাত্রায়। খেটে খাওয়া দিনমুজররা ঘর থেকে কাজের সন্ধানে বের হলেও অন্যরা প্রয়োজন ছাড়া তেমন একটা বের হচ্ছেন না।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে গরিব অসহায় মানুষকে কম্বল দেওয়া হলেও তা অপ্রতুল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৩
এমজে