ঢাকা: ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আরও ৩১৫ কোটি টাকা খরচ বেড়েছে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পে। একইসঙ্গে সময় বাড়ানো হয়েছে এক বছর।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্পটি দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধন করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১৫ সালে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পটি যখন অনুমোদন দেওয়া হয় তখন এর ব্যয় ছিল ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর মেয়াদকাল ছিল নভেম্বর ২০১৫ থেকে জুন ২০২০।
প্রথম সংশোধনে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। মেয়াদ বাড়িয়ে ডিসেম্বর ২০২২ করা হয়।
সর্বশেষ মঙ্গলবার প্রকল্পে দ্বিতীয় সংশোধনী আনা হয়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা করা হয় এবং সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
প্রকল্পে সরকারি অর্থায়ন ৪ হাজার ৬১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং চায়না এক্সিম ব্যাংকের ঋণ ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা।
প্রকল্পটি সংশোধন করে ব্যয় ও সময় বাড়ানোর কারণ হিসেবে বলা হয়- (ক) প্রাইজ কন্টিনজেন্সি খাতে প্রদত্ত অতিরিক্ত অর্থ সংশোধিত ডিপিপিতে প্রতিফলন (খ) বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার পরিবর্তনের কারণে ব্যয় বৃদ্ধি (গ) প্রকল্পের কার্যক্রমের পরিধি পরিবর্তন (ঘ) সার্ভিস এরিয়ার তৈজসপত্র, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, আসবাবপত্র এবং গৃহসজ্জা সামগ্রী ক্রয় (ঙ) নতুন অঙ্গ সংযোজন/বিয়োজন (চ) ভ্যাট ও আইটি বৃদ্ধি এবং (ছ) প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি।
চট্টগ্রাম জেলার বন্দর ও আনোয়ারা উপজেলায় নির্মিত এ প্রকল্পটির মুল উদ্দেশ্য হলো ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার টানেল নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা; এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ স্থাপন; কর্ণফুলী নদীর দুইপাড়ের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বিদ্যমান দুটি সেতুর উপর যানবাহনের চাপ কমানো এবং চীনের সাংহাইয়ের আদলে চট্রগ্রামে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকার, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) আব্দুল বাকি।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) একনেক সভায় কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ দ্বিতীয় সংশোধনীর অনুমোদনসহ একনেক সভায় সব মিলিয়ে ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলো- চট্টগ্রামের পটিয়ার শ্রীমাই নদে বাঁধ নির্মাণ, বরিশালে শেখ হাসিনা সেনানিবাসকে নদীভাঙন থেকে রক্ষায় প্রকল্প, মাতারবাড়ী কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (সওজ অংশ), কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলা সদর থেকে করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালী পর্যন্ত উড়াল সড়ক নির্মাণ, বাংলাদেশের ২৪টি শহরে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন প্রকল্প ও ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপটেড আরবান ডেভেলপমেন্ট ফেজ-২ (খুলনা) প্রকল্প।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩/আপডেট ১৬২০ ঘণ্টা,
এমইউএম/এএটি