লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদরের পূর্ব চরমনী মোহনে র্যাব-১১ এর অভিযানে ফের ২৭ হাজারটি ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায় র্যাব। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) ইয়াবাগুলো জব্দ করা হয়।
এর আগেও দুই দফা র্যাবের অভিযানে আরও এক লাখ ২০ হাজার ২০টি ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। তখন পৃথক অভিযানে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে র্যাবের দায়ের করা মামলায় তারা এখন কারাগারে আছেন।
এ নিয়ে তিন দফায় মেঘনার উপকূলীয় এলাকা পূর্ব চর রমনী মোহন থেকে সর্বমোট এক লাখ ৪৭ হাজার ২০টি ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হলো। এগুলো মাদক কারবারিরা ট্রলারে করে সমুদ্র পথে মেঘনা নদী হয়ে মজুচৌধুরীর হাট সংলগ্ন চর রমনী মোহন এলাকায় নিয়ে এসেছেন।
র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে লক্ষ্মীপুর জেলার সদর থানাধীন পূর্ব চর রমনী মোহন এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এতে প্রায় একাশি লাখ টাকা মূল্যের ২৭ হাজারটি ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে। মাদকগুলো টেকনাফ সীমান্ত এলাকা থেকে সংগ্রহ করে সমুদ্র পথে মাছ ধরার ট্রলারে করে আনা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
তিনি আরও জানান, মাদক কারবারিরা নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে খুচরা মূল্যে বিক্রির উদ্দেশে ইয়াবা ট্যাবলেটগুলো ঘটনাস্থলে মুজদ রেখেছিল। মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পলাতক ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে র্যাবের হাতে দফায় দফায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবার চালান জব্দ হওয়ার ঘটনায় জেলাব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে গত ৩ জানুয়ারি মাদকের মূল হোতা চর রমনী মোহনের ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) এবং যুবলীগ নেতা মনির হোসেন সজিব, গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মো. ইব্রাহিম ও যুবলীগকর্মী আমির হোসেনকে আটক করে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৮০ হাজার ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। পরদিন আটক তিনজনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার (ডিএডি) মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি করেন। এ মামলায় বাহাদুর মাঝি ও আব্দুর রহমান নামে দুইজন পলাতক ছিলেন। এরপর গত ৯ জানুয়ারি (সোমবার) র্যাবের হাতে আরও ৪০ হাজারটি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক হয় পলাতক আসামি বাহাদুর মাঝি। সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের পূর্ব চর রমনী মোহন এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এ চারজন এখন মাদক মামলায় কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
মাদক উদ্ধার ও মামলার ঘটনায় ইউপি সদস্য মনির হোসেন সজিব ও গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মো. ইব্রাহিমকে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া একই ঘটনায় মনির হোসেন সজিব ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ হারিয়েছেন। দলীয় পদ থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
এফআর