ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

তুমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দিনভর গুলি-আগুন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
তুমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দিনভর গুলি-আগুন

কক্সবাজার: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থিত কোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের দুই সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়েছে।  

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে বিকেল পর্যন্ত গুলি অব্যাহত রয়েছে, পাশাপাশি বিকেল চারটার দিকে এই শিবিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন শূন্যরেখার রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ।

এদিকে এ ঘটনায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী।  

মোহাম্মদ আলী জানান, হামিদুল্লাহ (২৭) ও মহিবুল্লাহ (২৫) নামের গুলিবিদ্ধ দুই ব্যক্তিকে উখিয়ার এমএসএফ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক হামিদুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন। মহিবুল্লাহকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবারও কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী সীমান্তে গুলির ঘটনা ঘটে।

রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘মিয়ানমারের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সকাল থেকে গুলি বিনিময় শুরু হয়। তারা কোনারপাড়া শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও ছড়িয়ে পড়ে। ’ 

এ সময় র‌্যাব সদস্যরাও গুলিবর্ষণ করে বলে জানান এই রোহাঙ্গা নেতা।  

দিল মোহাম্মদ আরও বলেন, দুই গ্রুপের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিকেল চারটার দিকে শিবিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে এখনই বলতে পারছি না।

এ ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গা মারা যেতে পারে জানিয়ে দিল মোহাম্মদ বলেন, কতজন হতাহত হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।  
অবশ্য কক্সবাজার র‌্যাব-১৫-এর সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম ও আইন) ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী বলেন, তুমব্রু সীমান্তে র‌্যাবের কোনো অভিযান নেই।  

তবে সকাল থেকে অব্যাহত গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ। তিনি বলেন, সেখানে কী হচ্ছে তা বলা যাচ্ছে না। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।  

এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে সকাল থেকে তমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় থেমে থেমে গুলির খবর জেনেছেন।  

ইউএনও বলেন, ‘যেহেতু ঘটনাটি শূন্যরেখায়, সেখানে আন্তর্জাতিক রীতিমতে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। তারপরও সীমান্তের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং প্রশাসনের তরফ থেকে খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। ’ 

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী সীমান্তে আরসার সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, বিকেলে আরসার এক শীর্ষ নেতার স্ত্রীসহ তিন মাদক কারবারিকে বিজিবি আটকের ঘটনায় বিজিবির বিওপি লক্ষ্য করে আরসার সন্ত্রাসীরা কয়েক শ গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে বিজিবিও গুলি ছোড়ে।

তবে মঙ্গলবার রাতে বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, বালুখালী বিওপি থেকে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে এবং সীমান্ত পিলার-২০ থেকে আনুমানিক ৮০০ গজ উত্তর-পূর্ব কোণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রহমতের বিল হাজিরবাড়ি নামক এলাকায় কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ীর সঙ্গে গুলির ঘটনা ঘটেছে। ইয়াবা কারবারিদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে মিয়ানমারের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

ঘটনার পর থেকে সব বিওপি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
এসবি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।