ঢাকা, বুধবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডিসি সম্মেলন শুরু মঙ্গলবার, ২৪৫ প্রস্তাব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৩
ডিসি সম্মেলন শুরু মঙ্গলবার, ২৪৫ প্রস্তাব

ঢাকা: মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নিয়ে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি)। এবার ডিসি সম্মেলন শেষ হবে ২৬ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার)।

ডিসি সম্মেলনকে সামনে রেখে এবার ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৪৫টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

রোববার (২২ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৩ উপলক্ষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দু-বছর পর গত বছর ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি ডিসি সম্মেলন হয়েছিল। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। তবে এবার সরাসরি উপস্থিত হয়ে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে তিনি সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। গত বছরের মতো এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের মূল ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন।

সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এবারের সম্মেলন তিন দিনব্যাপী হচ্ছে। গত সম্মেলনও তিন দিনব্যাপী ছিল। এবারে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং নির্দেশনা গ্রহণের পাশাপাশি স্পিকার ও বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জেলা প্রশাসকরা সৌজন্য সাক্ষাৎ, নির্দেশনা গ্রহণ ও মতবিনিময় করবেন। তাছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সামরিক-বেসামরিক সমন্বয় বিষয়ক অধিবেশন সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এবার সম্মেলনে মোট ২৬টি অধিবেশন হবে। এরমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য অধিবেশন ২০টি। এছাড়া একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে একটি, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষৎ নিয়ে একটি ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে দুটি অধিবেশন হবে। সম্মেলনে মোট ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশগ্রহণ করবে। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।

জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৪৫টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সংক্রান্ত, এ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রস্তাব ২৩টি। এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় (১৫টি প্রস্তাব) ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১৩টি), সুরক্ষা সেবা বিভাগ সংক্রান্ত (১১টি), গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১০টি) প্রস্তাব বেশি পাওয়া গেছে।

ডিসি সম্মেলনের প্রধান প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলো তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদারকরণ; ভূমি ব্যবস্থাপনা; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন; এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়।

গত বছরের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হারের বিষয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, ২০২২ সালে বাস্তবায়ন হার ছিল ৭৩ শতাংশ।

তিনি বলেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকেরা কী ম্যাসেজ নিয়ে মাঠ পর্যায়ে ফিরে যাবেন তা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারবেন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের প্রশাসনে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রমে নতুন গতির সঞ্চার হবে।

জাতীয় নির্বাচনের আগে শেষ সম্মেলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেশে যত নির্বাচন হয়েছে সব নির্বাচনেই প্রশাসনের তরফ থেকে সেভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। নির্বাচনে সহযোগিতার জন্য আমাদের ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতা আছে। সেই ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতাকে আমরা কাজে লাগাবো। আমরা নির্বাচনে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করে যাবো।

ডিসি সম্মেলনের বাজেট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সেই তথ্য আমার কাছে নেই। তবে আপনারা নিশ্চিত থাকেন যে আমরা ব্যয় সংকোচন করবো।

গত কয়েক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কারা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন তা ঠিক করে দেওয়া হয়- এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি জানি না মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনার কোনো অভিজ্ঞতা আছে কিনা, যদি থাকে তাহলে বুঝতেন কত আন্তরিকতার সঙ্গে উনি আলোচনা করেন। আপনারা তা চিন্তাও করতে পারবেন না। আপনারা যা শুনেছেন তা পূর্ণাঙ্গ চিত্র নয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৩
এমআইএইচ/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।