ঢাকা: রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্দান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নাদিয়ার সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে দ্বিতীয় দিনের মতো দক্ষিণ কাওলায় সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে চার দফা দাবি ঘোষণা করে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ২টার দিকে পুলিশের আশ্বাসে সড়ক থেকে অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেন তারা।
আন্দোলনরত নর্দান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আশরাফ জাহিদ বলেন, আমাদের বোন মারা গেছে, একজন শিক্ষার্থী মারা গেছে কিন্তু এ বিষয়ে কারো কোনো দায়িত্ব নেই? আমাদের ৪ দফা দাবি না মানতে হবে। নয়তো আবারও সড়ক অবরোধে নামবে শিক্ষার্থীরা।
তিনি বলেন, আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হলো। এর মধ্যে আমাদের ঘোষিত চার দফা দাবির বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে আবারও সড়কে নামতে বাধ্য হবো।
তিনি আরও বলেন, ভিক্টর ক্লাসিকের কোনো বাস সড়কে চলতে পারবে না। আজ থেকেই ভিক্টির ক্লাসিকের বাস চলাচল রুট পারমিট বন্ধ করতে হবে। যদি আবারও ভিক্টর ক্লাসিকের কোনো বাস সড়কে চলাচল করে তবে আমরা সঙ্গে সঙ্গে সড়কে নামতে বাধ্য হবো।
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ (ডিসি) মো.মোর্শেদ আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের একটি দাবি ছিলো বাসচালক ও হেলপার গ্রেফতার করা। তাদের আজ সকালেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়েছেন ভিক্টর ক্লাসিক বাসের রুট পারমিট বাতিল ও এই পরিবহনের বাস যেন সড়কে না চলে। ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের বাস যেন সড়কে না চলে সে বিষয়ে আমরা আজ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এছাড়া রুট পারমিট বাতিলের বিষয়টি একটু সময়ের ব্যাপার।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আরও দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী নাদিয়ার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও কাওলা এলাকায় নাদিয়ার নামে একটি বাস স্টপেজ করা। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে আমরা কথা বলব। এছাড়া ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলব। আর স্টপেজ নির্মাণের বিষয়টি সিটি করপোরেশন দেখবে।
রোববার (২২ জানুয়ারি) ভাটারা এলাকায় ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নাদিয়া নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে দক্ষিণখান কাওলা এলাকার সড়কে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও মিছিল করেছেন।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কিছু শিক্ষার্থীরা কাওলা এলাকায় রাস্তায় নেমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ওই দুর্ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সড়কে অবস্থান ও মিছিল করেন।
রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে ভাটারা এলাকায় ওই বাস একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এ সময় বাসচাপায় নাদিয়ার মৃত্যু হয়। আহত হয় তার বন্ধু মেহেদী হাসান।
নিহত নাদিয়া নর্দান ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্রী। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার চাষাড়ায়। এক সপ্তাহ আগে উত্তরায় একটি হোস্টেলে উঠেছিলেন নাদিয়া।
এ দুর্ঘটনার পর পর কাওলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা নিহত নাদিয়ার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ভিক্টর পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল এবং কাওলা এলাকায় বাস স্টপেজের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সন্ধ্যায় তারা সড়ক থেকে সরে যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩
এসজেএ/জেএইচ