শেরপুর: শেরপুরে নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের নিউমার্কেট হোটেল আলিশান কমিউনিটি সেন্টারে এ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ শেরপুর জেলা কার্যালয়, নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ এবং ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) যৌথভাবে এ সভাটির আয়োজন করে। এতে শেরপুর জেলা হোটেল-রেস্তোরা-সুইটমিট মালিক সমিতি, জেলা হোটেল-রেস্তোরা-সুইটমিট শ্রমিক ইউনিয়ন এবং ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রণমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি) সভাটি আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করে।
জেলা হোটেল-রেস্তোরা-সুইটমিট মালিক সমিতির সভাপতি মো. আনোয়ারুল হাসান উৎপলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুর চেম্বারের সভাপতি মো. আসদুজ্জামান রওশন ও জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম।
ক্যাব সাধারণ সম্পাদক হাকিম বাবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জেলা চালকল মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম হোসেন, পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মো. শাহজাদা, জনউদ্যোগ আহবায়ক শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ, জেলা হোটেল-রেস্তোরা-সুইটমিট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মানিক, শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান, জেলা মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি লুৎফুন্নাহার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে শস্য ও পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে নিরাপদ খাদ্য প্রস্তুত ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ, পরিবেশন ও বিপণন এবং রান্নাঘর ও হোটেল-রেস্তোরা, রেষ্টুরেন্টের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম। একই সঙ্গে তিনি নিরাপদ খাদ্য আইন, আইনের বিধি-বিধান ও এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত করেন। কাঁচা মাংস, তরি-তরকারির সঙ্গে ফ্রিজে রান্নাকরা খাবার সংরক্ষণ না করা, খাবার তৈরি ও পরিবেশনের সঙ্গে জড়িতদের হাতে গ্লাভস কিংবা মাথায় আবরণ না থাকা, হাতের নখ নিয়মিত না কাটা অপরিষ্কার হাত দিয়ে খাবার ধরা কিংবা পরিবেশন, খাবার তৈরিতে হাইড্রোজ কিংবা ক্ষতিকর রং-এর ব্যবহার নিরাপদ খাদ্যের পরিপন্থী এবং আইনবিরুদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে উল্লেখ করেন। এ সব বিষয়ে তিনি সবাইকে সতর্ক ও সাবধান হওয়ার পরামর্শ দেন।
চেম্বার সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান রওশন বলেন, খাবার তৈরি ও পরিবেশন এবং প্রক্রিয়াজাতকরনের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ধরনের অন্তত ১৭-১৮টি সরকারি দপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু লাইসেন্স করা কিংবা নবায়ন করার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের হয়রানি কিংবা দুর্ভোগের শিকার হয়ে থাকেন। এ জন্য তিনি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস’ (একমুখি সেবা) ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান। একই সঙ্গে হোটেল-রেস্তোরায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারিদের নামমাত্র সেবামুল্যে কিংবা বিনামুল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সনদ প্রদানের বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
জেলা হোটেল-রেস্তোরা-সুইটমিট মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল হাসান উৎপল বলেন, এ ধরনের আয়োজন বেশি করে হওয়া দরকার। নিরাপদ খাদ্য আইনে কিংবা ভোক্তা অধিকার আইনে ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে হোটেল-রেস্তোরায় ভালোভাবে নিয়ম মেনে খাদ্য পরিবেশন করা হলেও কিছু ভোক্তা ৮০ ভাগ খাবার উদরপুর্তির পর অবশিষ্ট খাবারে নিজের মাথার একটি চুল ফেলে নানা ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। এ জন্য তিনি মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণে আইনি সুরক্ষার বিষয়টি বিচেনায় নেওয়ার দাবি জানাই।
এ সভায় সরকারি কর্মকর্তা, শহরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরা ও সুইটমিট মালিক এবং শ্রমিক, ব্যবসায়ী নেতারা, নারী নেত্রী, রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সুধীসহ ৬০ জন অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩
এফআর