ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকা থেকে বিভিন্ন বাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণামূলকভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া একটি প্রতারক চক্রের মূলহোতা সোহেল রানা ওরফে মিলনসহ (৩৭) ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৪)।
প্রতারক চক্রের গ্রেফতার বাকি সদস্যরা হলেন- মো. ময়নুল ইসলাম মিঠু (২৮), হাফিজার রহমান (৪০), ইব্রাহিম (২৩), আল আমিন।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) লেফট্যানেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকারি-বেসরকারি উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ ও দরিদ্র বেকার যুবকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবদে গ্রেফতার আসামিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছেন। তারা প্রতারণামূলকভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার যুবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তারা জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ও নকল কাগজপত্র, ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি ও হেফাজতে রাখে। পরে উচ্চ বেতনের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার অসহায় বেকার যুবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের কাছ থেকে নগদ লাখ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র দিতেন। এই প্রতারক চক্রের রয়েছে কিছু পেইড এজেন্ট যারা বেকার ও শিক্ষিত যুবকদের কাছে নিজেরা চাকরি পেয়ে উপকৃত হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের আস্থা অর্জন করত। এই প্রতারক চক্র কোনো বাহিনীর সদস্য না হয়েও বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদীন ধরেই পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন বাহিনীসহ সরকারি-বেসরকারি চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের সাধারণ ও নিরীহ লোকজনকে প্রলুব্ধ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল।
তিনি জানান, প্রতারিত লোকজন টাকা দেওয়ার পরও চাকরিতে নিয়োগ না পেয়ে প্রতারকদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা না দিয়ে মারধরসহ বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল বলে জানায় ভুক্তভোগীরা।
ওই কর্মকর্তা জানান, এই চক্রের মূলহোতা সোহেল শুধু নিয়োগ প্রতারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, সে বাহিনীর পোশাক পরে ‘উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও আপলোড ও শেয়ার করে বিভিন্ন নারীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে কুরুচিপূর্ণ ছবি ও ভিডিওধারণ করত। পরে ভুক্তভোগীদের ব্ল্যাকমেইল করতো। সে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে চারটির বেশি বিয়ে করার মতো অপরাধ করেছে।
গ্রেফতার আসামিদের নামে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের ওই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৩
এসজেএ/এএটি