ঢাকা: দুর্নীতি দমনে সহযোগিতা চেয়ে দেশের সব জেলা প্রশাসকের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।
তিনি বলেছেন, জেলা প্রশাসকরা সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে জেলাতে কাজ করেন।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সম্মেলন কক্ষে জেলাপ্রশাসক সম্মেলন ২০২৩ - এর দ্বিতীয় দিনে দুদকের পঞ্চম অধিবেশন শেষে এ অনুরোধ জানান দুদদ চেয়ারম্যান।
মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, দুর্নীতি দমন না করে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা যায় না। দুর্নীতিকে সঙ্গে রেখে দেশের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশে পৌঁছানো সম্ভব না। দুর্নীতিকে দমনের মাধ্যমেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা যাবে।
জেলা উপজেলা পর্যায়ে ভূমি অফিস এবং অনেক সময় জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ভূমি অফিস বা অন্য কোথাও, জেলা পর্যায়ে কোথায় কোথায় দুর্নীতি হয় সে বিষয়ে নজর রাখতে জেলা প্রশাসকদের বলেছি। ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে ভূমি অফিসের দুর্নীতি কমানো যাবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি নির্মূলের বিষয়ে আমাদের সংবিধানেই বলা আছে। এর পেক্ষিতে আইন হয়েছে, কমিশন হয়েছে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে সেটা ডিসি হোক কিংবা এসি (সহকারী ভূমি কমিশনার) হোক যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাবে সেই অভিযোগ যদি অনুসন্ধানযোগ্য হয় আমরা তার অনুসন্ধান করব। দুর্নীতির অভিযোগ যার বিরুদ্ধে পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
দেশে অনেকগুলো সাংবিধানিক সংস্থা বা কমিশন থাকলেও একমাত্র দুর্নীতি দমন কমিশন ডিসি সম্মেলনে অংশ নিয়েছে।
সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বাধীন সংস্থার অংশগ্রহণ বিষয়টি কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এই প্রশ্ন কীভাবে রেসপন্স করব আমি বুঝতে পারছি না। সরকারের মন্ত্রীরা এসেছেন, আমরাও এসেছি। আমরা আমাদের কথা বলেছি। আমাদেরকে তো কেউ নিয়ন্ত্রণ করে বলে নাই যে আপনারা এই কথা বলবেন। অন্য কোনো কমিশনকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি সেটা আমরা জানি না।
জেলা প্রশাসক সম্মেলনে দুদক কেন আমন্ত্রিত এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, সেটা কেবল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগই বলতে পারবে। আমাকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে, তাই আমি এসেছি। আটজন বিভাগীয় কমিশনার ৬৪ জন জেলা প্রশাসককে একসঙ্গে পেয়েছি। আমি সেখানে আমার কথা বলেছি।
তাহলে কি সরকারি পর্যায়ের দুর্নীতি বেড়ে গেছে এজন্য কমিশনকে ডাকা হয়েছে এমন প্রশ্ন উত্তরে তিনি বলেন, এটা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বলতে পারে, তারা আমাদেরকে আহ্বান জানিয়েছিল এখানে অংশ নেওয়ার জন্য আমরা অংশ নিয়েছি। ৬৪ জন জেলা প্রশাসক ও আটজন বিভাগীয় কমিশনারকে পেয়েছি, আমি আমার বক্তব্য বলেছি। তাদেরকে বলেছি যেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নেওয়া হয়, দুর্নীতির কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, ব্যবস্থা নিতে না পারলে যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা জানায়।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তিন দিন ব্যাপী ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৩’ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
জিসিজি/এসএএইচ