ঢাকা: রাজধানীর দক্ষিণখানে তিন বছর আগে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) জুনিয়র সহকারি ম্যানেজার রাকিব উদ্দিন আহম্মেদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার এ রায় দেন।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৫ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
রায় ঘোষণার আগে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
জানা যায়, ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দক্ষিণখানের ৮৩৮ নম্বর ‘প্রেম বাগান’ নামক ভবনের চতুর্থ তলার বাসা থেকে মুন্নী বেগম (৩৭) এবং তার দুই সন্তান ফারহান উদ্দিন (১২) ও লাইবা রহমানের (৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওইদিন (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই ওই ভবনের বাসিন্দারা পচা গন্ধ পাচ্ছিলেন। প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো মৃত পশু-পাখি থেকে গন্ধ আসছে। কিন্তু আশপাশে খুঁজেও সে রকম কিছু পাওয়া যায়নি। তাই সন্দেহ বাড়তে থাকে।
এছাড়া, নিহত মুন্নীর ভগ্নিপতি সোহেল আহম্মেদ কয়েকদিন ধরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। এতে সবার সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। ওইদিন সকালে সোহেল আহম্মেদ তাদের খুঁজতে আসেন দক্ষিণখানের ওই বাসায়। এসে ঘরের দরজা বন্ধ পান।
পরে বাড়ির মালিকের সঙ্গে পরামর্শ করে চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। দেখতে পান, মুন্নী বেগম ও তার মেয়ে লাইবার মরদেহ একটি রুমের বিছানার ওপর পড়ে আছে। অন্য কক্ষের মেঝেতে পড়ে আছে ফারহান উদ্দিনের মরদেহ। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে দক্ষিণখান থানা পুলিশ এসে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহত মুন্নীর ভাই মুন্না রহমান পরদিন (১৫ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণখান থানায় রাকিব উদ্দিন আহম্মেদকে আসামি করে মামলা করেন।
২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাকিব উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিমানবন্দর জোনাল টিমের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মিজানুর রহমান।
মামলার বিচার চলাকালে আদালতে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে আজ (৩১ জানুয়ারি) এই রায় দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
কেআই/এনএস