ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নিশ্চয়তা দিলে বাংলাদেশ থেকে শাক-সবজি নেবে রাশিয়া: কৃষিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩
নিশ্চয়তা দিলে বাংলাদেশ থেকে শাক-সবজি নেবে রাশিয়া: কৃষিমন্ত্রী

ঢাকা: রাশিয়ার শীতকাল অনেক লম্বা। এ সময়ে তাদের কোনো ফসল হয় না।

শীতকালে বিভিন্ন সবজিসহ আমাদের দেশে যে ফসলগুলো উৎপাদন হয়, যেমন- ফুলকপি, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স, এগুলো রাশিয়ায় রপ্তানি করা সম্ভব। ঝুঁকিমুক্ত শাক-সবজির নিশ্চয়তা দিতে পারলে বাংলাদেশ থেকে এসব সবজি নেবে দেশটি।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভি মান্টিটস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক দিন দিন বাড়ছে। ভবিষ্যতে দুই দেশের সহযোগিতা বাড়াতেই জোর দিচ্ছি। সব দেশের সঙ্গে আমরা বন্ধুত্ব বাড়াতে চাই। পটাশিয়াম, ফসফেটসহ রাশিয়ার কাছ থেকে আমরা সার কিনি। এছাড়া টমেটোসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি রাশিয়ায় রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, এক সময় আমরা রাশিয়ায় অনেক আলু পাঠাতাম। কিন্তু নানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। রাশিয়া বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে, এখন আমরা আবার দেশটিতে আলু পাঠানোর ব্যবস্থা করবো। আলুর জন্য আমাদের আবহাওয়া খুবই উপযোগী। এখন আমরা উৎপাদন বাড়িয়ে রাশিয়ায় রপ্তানি করার উদ্যোগ নিচ্ছি। আম রপ্তানিরও সম্ভাবনা আছে। সব মিলিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত খুবই আন্তরিক। কিছু কিছু সমস্যা যদি আমরা সমাধান করতে পারি তাহলে বিপুল শাক-সবজি, ফলমূল আমরা রাশিয়ায় পাঠাতে পারবো। বিশেষ করে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দিয়েছেন রুশ রাষ্ট্রদূত। ঝুঁকিমুক্ত শাক-সবজির নিশ্চয়তা দিতে পারলে রাশিয়া আমাদের কাছ থেকে আমদানি করবে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। খুব দ্রুতই দুই দশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়বে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের ফুলকপির প্রশংসা করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা দিতে পারলে রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে এই সবজি কিনবে। রাশিয়ার প্রতি সবসময় আমরা দুর্বল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে। যে কারণে চিরদিন আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে দেশটির। পৃথিবীর মাত্র তিনটি দেশ থেকে পটাশিয়ামের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সার আনা যায়। তারা হলো: বেলারুশ, রাশিয়া ও কানাডা। প্রতি টন পটাশিয়াম আমরা ২১৯ ডলারেও কিনেছি। সেটি আমাদের এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ ডলারেও কিনতে হয়েছে।

করোনা ও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এমনটি হয়েছে। এখন দাম কিছুটা কমের দিকে। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রথম দিকে আমাদের অনেক অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উঠেছে, এলসিসহ সার আনার প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি।

মন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের পর্যাপ্ত সারের মজুদ রয়েছে। আমরা আবার রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের যে সমঝোতা রয়েছে, সেটি নবায়ন করার ব্যাপারে আলাপ করেছি। দ্রুতই এটি নবায়ন হবে এবং রাশিয়া থেকে আমরা পটাশিয়াম আনার প্রক্রিয়া শুরু করবো। এর আগে একটি প্রস্তাব উঠেছিল, কিন্তু সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা সেটি স্থগিত রেখেছে। আরেকটি হলো ডায়ামোনিয়াম ফসফেট। এটি সৌদি আরব ও অন্য দেশগুলো থেকে আমদানি করি। রাশিয়া থেকেও আনতে পারি। তাদের প্রস্তাব ভালো। দামও সুলভ। খুব তাড়াতাড়ি রাশিয়া থেকে ডায়ামোনিয়াম ফসফেট আনবো বলে আশা করছি। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সার, আমরা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫,২০২৩
জিসিজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।