ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গোলাম আজম নাম বলে চাকরি হয়নি, বদলাতে না দেওয়ায় বাবাকে খুন!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩
গোলাম আজম নাম বলে চাকরি হয়নি, বদলাতে না দেওয়ায় বাবাকে খুন!

নিজের মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে সুস্থ করতে দীর্ঘদিন ধরে জোর করেই ওষুধ খাওয়াতেন বাবা ফজলে আলম। কে জানত এমন জোর করে ওষুধ খাওয়ানোই একদিন কাল হয়ে দাঁড়াবে! প্রাণ হারাতে হবে ছেলের হাতেই! ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের শান্তিনগর একুশে মোড় মহল্লায় রবিবার গভীর রাতে ঘটে এমন হত্যাকাণ্ড।



লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল তৈরি করে পুলিশ জানায়, ফজলে আলমের বুকে ধারালো চাকু ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে রড দিয়ে মাথায় আঘাত ও মুখে বালিশ চাপা দেন ছেলে গোলাম আজম।

বাবাকে নির্মমভাবে খুন করার পর গভীর রাতেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন গোলাম আজম। থানায় এসে বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করুন, বাবাকে খুন করেছি। ’

স্থানীয়রা জানিয়েছে, ঘাতক ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন। এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে তদন্ত চলমান রয়েছে। মামলার প্রস্তুতিও চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হত্যা নিশ্চিত করে ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করেন গোলাম আজম। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় পরিবারের প্রতি ক্ষোভে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
প্রতিবেশী ও নিকটাত্মীয়রা জানান, নিহত ফজলে আলম চার ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা। গোলাম আজম তার দ্বিতীয় ছেলে। তিনি রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষা শেষে তিনি দিনাজপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী এবং এক সন্তান রয়েছে।  

গোলাম আজম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছেন। বাবা ফজলে আলম তার সুস্থতায় চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আগে সাংবাদিকরা গোলাম আজমের কাছে বাবাকে হত্যার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার নামের সমস্যা। গোলাম আজম আমার নাম হওয়ায় সরকারি চাকরি হয়নি। সবখানে নাম পরিবর্তন করতে বললে বিষয়টি আমার বাবাকে বারবার জানালেও তিনি নাম পরিবর্তন করতে দেননি। ’

তিনি আরো বলেন, ‘রাজশাহীতে ছাত্র থাকা অবস্থায় নামের কারণে একাধিকবার জেলে যেতে হয়েছে। আমি সুস্থ, আমাকে মানসিক রোগী বানানো হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, আমাকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়। আমি যে মানসিক রোগী নই তা কাউকে বোঝাতে পারিনি। আমার বাবা এ বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। এ অবস্থায় তিন মাসের শিশুসন্তান নিয়ে আমার স্ত্রী আমাকে ফেলে তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।