গাইবান্ধা: বিস্তির্ণ ফসলের মাঠজুড়ে কাঁদা-পানিতে রোপিত ইরি-রোরো ধানের চারা। সময়ের ব্যবধানে সবুজ রঙে সাজছে গোটা প্রান্তর।
টাকার অভাবে অন্যদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভাড়ায় চালিত ট্রাক্টরে জমি চাষ ও চারা রোপন করতে পারেননি এই কৃষক। তাই ছোট দুটি গাভী দিয়েই জমিতে হাল দিতে হচ্ছে তাকে।
যদিও এই যান্ত্রিক যুগে গরুর হাল সহজে চোখেই পড়ে না আজকাল। আগে চাষিরা বলদ বা ষাড় দিয়ে জমি চাষ করতেন। যে চিত্র এখন মেলা ভার।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) পড়ন্ত বিকেলে উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়নের গোপিনাথপুর পাতারে (মাঠে) বিলুপ্ত প্রায় গরুর হাল দিতে দেখা যায় আমিরুলকে। তিনি গোপিনাথপুর গ্রামের সমশের আলীর ছেলে।
চল্লিশের এই যুবক জানান, জীবিকা নির্বাহে সহায়-সম্বল বলতে দুটি দেশী ছোট গাভী, আর গোপিনাথপুর পাতারে বিঘা দেড়েক জমি আছে তার। তা দিয়ে কোনো মতে পাঁচ সদস্যের সংসার চলে। সবসময় নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তার ওপর সার-তেলসহ সব দ্রব্যমূল্য আকাশ ছোঁয়া হওয়ায় সংসার চালাতে দিশেহারা অবস্থা।
আমিরুল বলেন, পাতারে সবার জমিগাড়া (রোপন) শেষ। এখন আর গরুর হাল চলে না। সবাই ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করে। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় হাল দিতে পারিনি। এখন জমিতে আর ট্রাক্টর নামাতে দেবে না অন্য কৃষকরা। কারণ এতে তাদের ধানের চারার ক্ষতি হবে। তাই বাধ্য হয়ে ছোট দুটি গরু দিয়েই জমি চাষ করছি। পুরো জমি তৈরি করতে দুই দিন সময় লাগবে। অথচ ট্রাক্টরের মাধ্যমে মাত্র দুই ঘণ্টায় জমি চাষ ও তৈরি সম্ভব।
প্রতিবেশী কৃষক হাফিজার রহমান জানান, পাতারে সবচাষিকে একসঙ্গে জমি চাষ-রোপন করতে হয়। নয়তো রোপন থেকে শুরু করে ফসল কর্তন পর্যন্ত সব পর্যায়ে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়।
পাবনাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। জানলে ওই কৃষককে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা যেত। তার পরেও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্যের মাধ্যমে আমিরুলের খোঁজ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩
এনএস