কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় শিলপাটা কারিগর ইসমাইল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. গোলাম রাব্বী নামে এক কলেজছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে মামলার আসামি মো. গোলাম রাব্বী কিশোরগঞ্জের ৪নং আদালতে বিচারক রিয়াজুল কাউসারে কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে আসামি মো. গোলাম রাব্বীকে বিচারকের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলার মঠখলা বাজারের এগারসিন্দুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে মো. গোলাম রাব্বীকে (২০) গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে কিশোরগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়।
মো. গোলাম রাব্বী পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের চরখামা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে এবং মঠখলা এলাকার হাজী জাফর আলী কলেজের এইচএসসির ২য় বর্ষের মানবিক বিভাগের ছাত্র।
অন্যদিকে নিহত ইসমাইল (৪০) পাকুন্দিয়া উপজেলার চরখামা গ্রামের মৃত লিলু মিয়া ছেলে। তিনি বোনের বাড়িতে থেকে শিলপাটা খোদাইয়ের কাজ করে আসছিলেন।
পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পাকুন্দিয়া উপজেলার চরখামা এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড় থেকে মো. ইসমাইলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের সময় ইসমাইলের গলায় মাফলার পেঁচানো ছিল। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ঘুমের ট্যাবলেটের খালি পাতা, গিয়ার পানীয়র খালি বোতল ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে কারও প্রতি কোনো সন্দেহ ছিল না। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় মৃতের বড় বোন আসমা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান।
পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মামলা দায়েরের ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পাকুন্দিয়া উপজেলার মঠখলা বাজারের এগারসিন্দুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. গোলাম রাব্বীকে (২০) গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে আসামি গোলাম রাব্বী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আসামি মো. গোলাম রাব্বীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সূত্র আরও জানায়, অবৈধ সম্পর্ক ও আর্থিক লেনদেনসহ নানাবিধ কারণে ইসমাইলের সঙ্গে আসামি গোলাম রাব্বীর শত্রুতা সৃষ্টি হয়। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর ইসমাইল কুড়িখাই মেলায় যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে ইসমাইলকে কৌশলে আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ের নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় আসামি গোলাম রাব্বী। রাত অনুমান ৯টার দিকে গিয়ার নামক পানীয়র সঙ্গে গোপনে ৪টি ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ানোর পর ইসমাইলের গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গোলাম রাব্বী।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
জেএইচ