কুমিল্লা: কুমিল্লায় ২৯টি চোরাই গাড়িসহ চোর চক্রের ১৮ জন সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর সদস্যরা। গত ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা সদর ও বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চোরাই গাড়িসহ তাদের আটক করে।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা জানান র্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
তিনি আরও জানান, যাত্রী সেজে গাড়িতে উঠতো। সুযোগ পেলেই ড্রাইভারকে জিম্মি করে নিয়ে যেতো অটোরিকশা। তারপর আরেকটি গ্রুপ সেই গাড়ি নিয়ে যেতো কুমিল্লার আরেকটি উপজেলায়। সেখানে থাকা আরেকটি গ্রুপ রং বদলে বিক্রি করত এসব গাড়ি।
কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার জানান, শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পালপাড়া এলাকার খলিলের গ্যারেজে একটি চোরাই গাড়ি আছে বলে তথ্য পাই। পুরো সিন্ডিকেটকে হাতেনাতে গ্রেফতারের জন্য গ্যারেজটিকে পর্যবেক্ষণের আওতায় নিয়ে আসি। পরে রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে সিন্ডিকেটের সদস্যরা কাটার মেশিন দিয়ে একটি কাভার্ডভ্যান কেটে যন্ত্রপাতি আলাদা করার সময় চক্রের মূলহোতা খলিলসহ আটজনকে হাতেনাতে আটক করি।
এ সময় আটকরা হলেন- কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আড়াইওড়ার মনোহর আলীর ছেলে কাউসার আলী খলিল (৪৫), একই এলাকার ওহাব কাজীর ছেলে মো. কাইয়ুম (৪২), মো. মুক্তার হোসেন মুসার ছেলে মো. সাজিদ হোসেন (২০), ভাটপাড়া এলাকার নান্নু মিয়ার ছেলে নাজমুল হোসাইন রবিউল (১৯), হারং গ্রামের মো. আলম মিয়ার ছেলে মো. আবু কাউসার (৩৫), বদরপুর গ্রামের মো. হোসেনের ছেলে মো. পিয়াস (৩৩), আড়াইওড়ার মৃত দিদার বক্সের ছেলে মো. জহির মিয়া (৪০) এবং মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামের মো. হান্নান মিয়ার ছেলে মো. জামশেদ হোসেন (২১)।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এ সময় তাদের স্বীকারোক্তিতে গাড়ি চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত আরেকটি সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজন সদস্যের তথ্য পাই। তথ্য অনুযায়ী রোববার রাতেই কুমিল্লা সদরের চম্পকনগর, বুড়িচং থানাধীন ভারেল্লা (দক্ষিণ) ও পশ্চিম সিংহ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ওই চক্রের মূলহোতা জাহাঙ্গীরসহ ১০ জনকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার নবীয়াবাদ গ্রামের মৃত সামসুল আলমের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম জাহাঙ্গীর (৪৫), সদর উপজেলার শিমড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে হৃদয় হাসান (১৯), বুড়িচং উপজেলার কংশনগর গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে শুক্কুর আলী (২৩), পারুয়ারা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে রিপন মিয়া ওরফে আব্দুল আলীম (২৭), চান্দিনা উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের মো. মোহর আলীর ছেলে মো. সাইফুল (৩২), ব্রাহ্মণপাড়ার সাহেবাবাদ গ্রামের মইনুল হোসেনের ছেলে মো. আল আমিন (২৪), নগরীর শাসনগাছার আব্দুল মালেকের ছেলে মনির মিয়া (৩৯), সদরের আড়াইওড়ার কাজী মঞ্জিলের ছেলে মজিদ (৩০), বুড়িচংয়ের পাঝয়ারা গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে মো. তাজুল ইসলাম (৩২) এবং পশ্চিম সিংহ গ্রামের শাহজাহানর ছেলে মো. ওমর ফারুক (২৮)।
র্যাব কর্মকর্তা সাকিব বলেন, এ চক্রের অন্যান্য পলাতক আসামিরা হলেন, শফিক (৬০), কামাল (৫২), জহিরুল (৩৬), সোহেল (৩০), সেলিম (৩৫), জালাল (৪৫), জামাল (৪৫), মনির (৪০), নজির (৩৬), মো. পাভেল আহম্মেদ (৩০)।
তিনটি গ্রুপের কথা উল্লেখ করে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, একটি গ্রুপ চুরি করে। আরেকটি গ্রুপ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। অন্য একটি গ্রুপ রঙ বদলানো ও বিক্রির কাজ করে। তাদের বিরুদ্ধে কুমিল্লার কোতোয়ালি ও বুড়িচং থানায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়:১৪৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
এসএম