মেহেরপুর: প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় খোকন ওরফে প্রতিক হোসেন (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে মেহেরপুর (জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. তহিদুল ইসলাম এ রায় দেন।
খোকনের বাড়ি ঘর, স্থাবর অস্থাবর সকল সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে এই অর্থদণ্ড প্রদানের নির্দেশ দেন
এ বিচারক।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত খোকন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মুকুল হোসেন ওরফে মুকুল ডাকাতের ছেলে।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের শাহিন আলীর মেয়ে বাকপ্রতিবন্ধী (১৪) শিবপুর গ্রামে তার নানার বাড়িতে বেড়াতে যায়। এ দিন সন্ধ্যার দিকে সে বাড়ি ফেরার পথে একই গ্রামের খোকন তাকে ধরে নিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। পরে সে রক্তাক্ত অবস্থায় তার নানার বাড়িতে গিয়ে ঘটনা খুলে বলেন। ওই ঘটনায় বাকপ্রতিবন্ধী শিশু আসামির বাড়ি দেখিয়ে দেয় এবং আসামি খোকনকে শনাক্ত করে। পরে ধর্ষিতার মা বেলি খাতুন বাদী হয়ে ২ জনকে আসামি মুজিবনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১) একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর-১১। নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নম্বর ৬৪/১৯। মামলায় খোকন এবং মমিনুল শেখ ওরফে কালুকে আসামি করা হয়।
পরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুব্রতকুমার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দেন। এতে আসামি খোকন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯/১ সন্দেহাতীতভাবে দোষি প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারদণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত খোকনের প্রতি আরোপিত অর্থদণ্ড ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য করা হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ক্ষতিপূরণের টাকা আসামি খোকনের বর্তমান সম্পদ হতে আদায় করা সম্ভব না হলে তিনি ভবিষ্যতে যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হবেন সেই সম্পদ হতে আদায়যোগ্য হবে।
এক্ষেত্রে সম্পদের উপর অন্যান্য দাবি উপেক্ষা করে ক্ষতিপূরণের দাবি প্রাধান্য পাবে। রায়ে আরও বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১৬ ধারার বিধান অনুযায়ী কালেক্টরেট মেহেরপুর কে আসামি মো. খোকনের স্থাবর বা অস্থাবর বা উভয় প্রকার সম্পদ নিলামে বিক্রি করে বিক্রয়লদ্ধ অর্থ এই ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। মামলার অপর আসামি মমিনুল ওরফে কালুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পিপি এস এস আসাদুজ্জামান। এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কৌশলী ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
এসএম