ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলন

আধিপত্য বিস্তারের জেরে খুন হন শাওন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
আধিপত্য বিস্তারের জেরে খুন হন শাওন শাওনকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতাররা

ঢাকা: রাজধানী যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগে আধিপত্য বিস্তারের জেরে মো. শাওন (২৮) খুন হন বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় দুটি গ্রুপ ছিল। একটির নেতৃত্বে ছিলেন হত্যার শিকার শাওন। অপরটি নেতৃত্বে ছিলেন গ্রেফতার আসামি মিজানুর রহমান মিজান। মূলত এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শাওনকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন মিজান।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত বছরের মাঝামাঝি সময় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শাওনের সঙ্গে রজবের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে এরই জেরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি রজব তার বড় ভাই মিজানকে জানান। পরে তারা কিছুদিন আগে মিজানের নেতৃত্বে শাওনকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন।  

তিনি বলেন, ঘটনার দিন (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে শাওন তার স্ত্রীর জন্য ওষুধ আনতে বাসা থেকে বাইরে বের হলে। আগে থেকে ওত পেতে থাকা মিজান ও রজব মোটরসাইকেল নিয়ে শাওনের সাসনে আসে। আসামি রজব অতর্কিতভাবে ভুক্তভোগীকে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেন। হত্যাকাণ্ডের সময় জুয়েল রাস্তার মোড়ে পাহারার দায়িত্বে ছিলেন।

এতে শাওন গুরুতর জখম হয়ে জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে আসামিরা দৌঁড়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপুরি আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। ঘটনার পরপরই মিজান, রজব ও জুয়েল মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার মিজান যাত্রাবাড়ী এলাকার একজন চিহ্নিত অপরাধী। তার নামে যাত্রাবাড়ী ও মীরহাজিরবাগ এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সময় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। রজবের সঙ্গে শাওনের মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগীকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য তার নেতৃত্বেই এ হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।

ঘটনার পর মিজানুর শ্যামপুর এলাকায় তার আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করেছিলেন। পরে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান কমান্ডার আল মঈন।

মীরহাজিরবাগে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন মো. শাওন। তিনি টিকাটুলীতে একটি ট্রাভেলস কোম্পানীতে চাকরি করতেন। একই এলাকায় বসবাস করতো মিজানুর রহমান ওরফে মিজান বেপারী, রজব ও জুয়েল ওরফে ফুটবল জুয়েল।

গত বছরের মাঝামাঝি সময় এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শাওনের সঙ্গে জুয়েলের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি রজব তার বড় ভাই মিজানুরকে জানায়। এতে শাওনকে উচিত শিক্ষা দিতেই পরিকল্পনা করে মিজানুর, রজব ও জুয়েল।  

নিহত শাওনের বড় ভাই বাদী হয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে মূল পরিকল্পনাকারী মিজানুর রহমান ওরফে মিজান বেপারী (৩২) এবং মাদারীপুর জেলায় থেকে জুয়েল ওরফে ফুটবলার জুয়েলকে (২৯) গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০। অপর আসামি রজরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
এসজেএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।