ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১১ দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকের চিঠি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
১১ দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকের চিঠি

ঢাকা: ১১ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিঠি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক চিঠিতে এসব দাবি জানান তারা।

সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ মোটরযানের পরিষেবার বিভিন্ন ফি নতুন করে প্রায় কয়েকশগুণ বাড়ানো হয়। এই ফি কমানোর দাবিসহ চিঠিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।

আওয়ামী লীগের দুর্দিনে ও ২০১৪-১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনায় মালিক-শ্রমিকেরা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে দাবি করে সড়ক পরিবহন সেক্টরের বিরাজমান সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপ কামনা করে সংগঠনটি।

ফি বৃদ্ধির বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, গাড়ির টায়ার-টিউব ও খুচরা যন্ত্রাংশের মূল্য প্রায় ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে গাড়ির পরিচালন ব্যয় অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে মালিকরা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ এ আরোপিত মোটরযানের পরিষেবা ফি সংশোধন করা আবশ্যক।

অসঙ্গতিপূর্ণ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’র সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ওই আইন সংশোধনের জন্য একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইন সংশোধনের জন্য কিছু যৌক্তিক সুপারিশ পেশ করেছিল কমিটি। কিন্তু প্রায় বছর পার হলেও সংশোধনী পাস না হওয়ায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এজন্য প্রস্তাবিত সংশোধনী অবিলম্বে পাস করা দরকার।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী সব জেলা ও হাইওয়েতে ট্রাক শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও সব সুযোগ সুবিধাসহ টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়নি। জেলায় ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা দরকার। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চালক, শ্রমিক এবং পথচারীদের সচেতন করতে ২২ অক্টোবর একদিনের পরিবর্তে তিনদিন সড়ক নিরাপত্তা দিবস ঘোষণা করা আবশ্যক। এতে সড়ক নিরাপদ রাখার ব্যাপারে সবাই উদ্বুদ্ধ হবেন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে চালকদের ডোপ টেস্ট সেন্টার দেশের সব জেলায় নেই জানিয়ে চিঠিতে আরও বলা হয়, এ ব্যবস্থা না থাকায় চালকরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া ডোপ টেস্টের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি ৯০০ টাকা একজন চালকের পক্ষে প্রদান করা কষ্টসাধ্য। তা কমিয়ে ৫০০ টাকা করা প্রয়োজন।

সড়ক পরিবহনে সৃষ্ট সমস্যা দূর করার জন্য বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা ও সড়ক দুর্ঘটনা রোধকল্পে দেশে দক্ষ চালক তৈরির জন্য বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণে প্রতি জেলায় প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন।

১৯৮৪ সালে ঢাকার সায়দাবাদ, মহাখালী ও গাবতলি এলাকায় তিনটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে গাড়ির সংখ্যা ১০০ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব টার্মিনালে গাড়ি পার্কিং স্থান সংকুলান হচ্ছে না। ফলে টার্মিনালের আশপাশের রাস্তা থেকেই বিভিন্ন পরিবহনের গাড়ি চলাচল করছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভায় বাস টার্মিনালের নির্ধারিত স্থানের বাইরে দূরপাল্লার বাস কাউন্টার ঢাকা শহরে রাখা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে মালিকরা ব্যবসায় অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এজন্য ঢাকার বাইরে নতুন টার্মিনাল নির্মাণ না করা পর্যন্ত ঢাকা শহর থেকে দূরপাল্লার কোনো কাউন্টার সরানো যাবে না।

অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সুপারিশে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী সব গাড়ির রুট পারমিট প্রদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য মেয়রকে নির্দেশ প্রদান করা প্রয়োজন। বাস রুট রেশনালাইজেশনের নামে ঢাকা শহরে অন্যান্য রুটের সব মালিকের গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি নতুন গাড়ির রুট পারমিট প্রদানও বন্ধ রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ ট্রাক, কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে সমন্বয়ে পরিষদটি গঠিত হয়েছে। এবং চিঠিতে সই করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙা, মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, বাংলাদেশ ট্রাক, কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক রুস্তুম আলী খান, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রমেশ চন্দ্র ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
এনবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।