ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ফের আগুন লাগার ঘটনা ঘেটেছে। শনিবার (৪ মার্চ) ঢামেকের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ২০৫ নম্বর শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় শিশু সার্জারি ২০৫ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় ডাক্তারদের রুম সংলগ্ন জানালার নিচে ময়লার স্তূপ থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। এতে ওই ওয়ার্ডের রোগীদের স্বজনদের মাঝে আগুন আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ে। তখন সেখানে ভর্তি থাকা ৮ মাস বয়স থেকে ৯ বছরের শিশুরা স্বজনদের সহযোগিতায় ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যায়।
ওই ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স তানজিলা জানান, যখন জানালার নিচে ময়লার স্তূপ থেকে আগুনের ধোঁয়া ওয়ার্ডে ঢোকার আগেই সেখানে ভর্তি ৫২ শিশুকে স্বজনদের মাধ্যমে বের করে আনা হয়। এসময় সেখানে থাকা রোগীদের স্বজনরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাদের সান্ত্বনা দিয়ে আস্তে আস্তে বের করে নিয়ে আসা হয়। এই ওয়ার্ডে ৮ মাসের শিশু থেকে থেকে ৯ বছর শিশুরা ভর্তি ছিল। তবে বেশিরভাগই একদম শিশু।
এদিকে ধোঁয়া দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজ, আবুল হোসেনসহ বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন, ঢামেক শাখার সভাপতি কামাল হোসেন পাটোয়ারী ও জরুরি বিভাগের নার্স ইনর্চাজ লিয়াকত। এছাড়া হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের প্রধান প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) আব্দুর রবসহ অন্যান্যরা এগিয়ে আসেন এবং সবাই মিলে কোনো ক্ষক্ষতি ছাড়াই তাৎক্ষণিক আগুন নেভাতে সক্ষম হন।
এর আগেই সেখানে উপস্থিত হন হাসপাতালের পরিচালক ব্রি.জেনারেল মো. নাজমুল হক, সঙ্গে ছিলেন সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলমসহ আরও অনেকে।
ওই ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা সাড়ে ৪ মাসের মাইশার মা শারমিন ও চার বছরের রোগী জুনায়েদের মা খাদিজা জানান, ওয়ার্ডের বারান্দায় যখন ধোঁয়া বের হতে দেখি, তখন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সবাই নিজের রোগীকে নিয়ে দ্রুত সেখান থেকে বের হয়ে যাই। ভয়ে অনেকে কান্নাকাটিও করছিলেন। তবে তাৎক্ষণিক ওয়ার্ডে থাকা নার্স ও অন্যান্যরা সবাই আমাদের সান্তনা দিয়েছেন, সাহস যুগিয়েছেন। পরে আতঙ্ক কেটে গেলে সবাই আবার ওয়ার্ডে ফিরে আসি।
এদিকে হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া হাসপাতালে রোগী ও ভিজিটররা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলেন। হাসপাতালের লোকজন সেগুলো পরিষ্কারও করে প্রতিদিন। যেহেতু হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি আছে, তাই স্বজন আছে আরও কয়েকগুণ। তারা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলেন। আজকেও জানালার নিচে জমে থাকা ময়লার স্তূপে একটু ধোয়া উড়তে দেখা দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র দিয়ে আমাদের কর্মীরা সেটা নিভিয়ে ফেলেছে।
ফায়ার সার্ভিস দপ্তর থেকে ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, ঢামেক হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে দ্রুত দুটি ইউনিট পাঠানো হয়েছিল। তবে তারা পৌঁছানোর আগেই হাসপাতালের স্টাফরা অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
>>> আরও পড়ুন: ঢামেকে আগুন: আতঙ্কে নামতে গিয়ে রোগীর মৃত্যু
ঢামেকের নতুন ভবনে আগুন, রোগী–স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২৩
এজেডএস/এমএমজেড