লক্ষ্মীপুর: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত মো. সালাউদ্দিনের (৩৩) বাড়ি লক্ষ্মীপুরে কমলনগর উপজেলার চর লরেন্স এলাকায়। তিনি চরলরেন্স ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের লরেন্স গ্রামের মহিজল হকের বড় ছেলে।
বাড়িতে তার বাবাসহ সৎ মা, দুই ভাই ও তিন বোন রয়েছে। তিনিই ছিলেন পরিবারের একমাত্র ভরসা। তার উপার্জনের টাকা দিয়েই চলতো দরিদ্র এ পরিবারটি।
পরিবারের সদস্যরা জানায়, রমজানের আগে বাড়িতে আসার কথা ছিল সালাউদ্দিনের। কিন্তু এখন বাড়িতে আসবে তার পুড়ে যাওয়া মরদেহটি।
দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মরদেহ একটিবার দেখার জন্য বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনরা অপেক্ষা করছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সালাউদ্দিনের মরদেহ পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আকুতি জানিয়েছে আত্মীয়-স্বজন এবং এলাকাবাসী।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, সালাহউদ্দিনের বাবা মহিজল হক শারীরিকভাবে দুর্বল। লাঠিতে ভর করে চলাফেরা করেন। এতে উপার্জন করার ক্ষমতা হারিয়েছেন তিনি। সালাউদ্দিনের পাঠানো টাকা ও মানুষের কাছে চেয়ে-চিন্তে সংসার চলতো তার। তাদের পরিবারটি ছিল নদী ভাঙা। ১০ বছর আগে মেঘনা নদী তাদের সবকিছু কেড়ে নেয়। তখন উপজেলার সাহেবেরহাটে ছিল তাদের বাড়ি। নদীতে বসতি ভেঙে যাওয়ার পর চর লরেন্স এলাকায় বসতি গড়ে পরিবারটি। সেখানে সামান্য একটু জমিতে জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস দরিদ্র পরিবারটির।
অভাব অনটনে সংসারে বড় ছেলে ছিল সালাহউদ্দিন। পরিবারের ছিল অন্যতম ভরসা।
শনিবার (৪ মার্চ) রাতে চট্টগ্রাম হাসপাতাল থেকে একজন চিকিৎসক বাড়িতে ফোন দিয়ে সালাউদ্দিনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। মৃত্যুর খবরে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারের ওপর।
এদিকে খবর পেয়ে রোববার (৫ মার্চ) ভোরে মহিজল তার অন্য দুই ছেলে সবুজ হোসেন ও রাকিব হোসেনকে নিয়ে সীতাকুণ্ডে ছুটে গেছেন। সেখানে ছেলের মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুলপুর এলাকায় ‘সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত হন লক্ষ্মীপুরের সালাউদ্দিন। শনিবার (৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২৩
আরএ