ঢাকা: তিন দফায় রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচল করা ৫৯ কোম্পানির ৩৩০৭টি বাসে ই-টিকিট ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এ পদ্ধতি কেমন চলছে, সেটি দেখতে পরিদর্শনের যায় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
জানা গেছে, বাস যাত্রীদের নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (৫ মার্চ) সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ নিজেই ই-টিকিটিং প্রক্রিয়া দেখতে সরেজমিনে নামেন। রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এসে তিনি যাত্রীদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেন। তাকে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীরা।
এছাড়া সকাল থেকে এখানে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালত- ৮ দায়িত্ব পালন করছিলেন। মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালত বসান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল।
পুলিশের সহায়তায় তিনি বিভিন্ন বাস দাঁড় করিয়ে চেক করেন ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির ফিটনেস না থাকাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে দুটি বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বাকিদের সতর্ক করে ছেড়ে দেন। দুপুর ১২টার কিছু সময় পর সেখানে আসেন খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।
তিনি কয়েকটি বাসে উঠে যাত্রীদের সঙ্গে ই-টিকিটিং বিষয়ে কথা বলেন। কয়েকটি বাসের যাত্রীরা সন্তোষ প্রকাশ করলেও দুয়েকটি বাসের যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা এনায়েত উল্যাহর কাছে টিকিট দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি তার সঙ্গে থাকা সংশ্লিষ্ট পরিবহনগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেন।
এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে এক যাত্রী বলেন, ই-টিকিটিং বিষয়ে স্টপেজ জটিলতা আছে। এছাড়া অনেক সময় কন্টাকটাররা টিকেট দিতে চান না। এর পরি প্রেক্ষিতে এনায়েত উল্যাহ বলেন, আপনারা টিকিট ছাড়া কেউ ভাড়া দেবেন না। প্রয়োজনে ওই পরিবহন কোম্পানির এমডিকে কল করে বিষয়টি জানাবেন।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ সময় আরও বলেন, আমরা কিছু কিছু বাসে অভিযোগ পাচ্ছি। আমরা সেই বাস মালিকদের ডেকে কথা বলছি। অনেকদিন পর এই সিস্টেমটা চালু করা হয়েছে, তাই স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগবে। মালিক পরিবহন সমিতির টিম কাজ করছে, আমি নিজে মাঠে থেকে কাজ করছি। এই পদ্ধতি ঠিক করতে রাস্তায় ওপেন ১৯ জন চেকার কাজ করছে। এখানে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমি বাসে উঠে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বললাম। তারা ই-টিকিটিংয়ের বিষয়ে খুবই খুশি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া বন্ধ করা। আশা করি আমরা এটা বাস্তবায়ন করতে পারব।
সিগনাল দেওয়ার পরও বিকাশ পরিবহনের একটি বাস না থামানোর বিষয়ে জানতে চাইলে এনায়েত উল্যাহ বলেন, যে পরিবহনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ সেই পরিবহনের এমডি এখানে আছে। তাকে আমি মৌখিকভাবে বলেছি, লিখিতভাবে বলেছি। যদি ঠিক না হয়, তবে রাস্তায় তাদের গাড়ি চলাচল আমরা বন্ধ করে দেব। ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই জায়গাটায় আমদের নীতি জিরো টলারেন্স।
বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (আদালত-৮) সমর কুমার পাল বলেন, নিয়মিত অভিযানে আমরা সবকিছুই দেখছি। তবে আজ বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে বাসে ই-টিকিটিংয়ের বিষয়ে। আমরা এ পদ্ধতি নিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। যাত্রীরা যেন ভাড়া দিয়ে টিকিট বুঝে নেন, এ বিষয়ে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় ভাড়া নিয়ে কন্টাকটাররা টিকিট দিতে চায় না। আমরা যাত্রীদের বলার চেষ্টা করেছি, তারা যেন টিকিট দিতে কন্টাকটারকে বাধ্য করে। তাহলে এটা একটা অভ্যাসে পরিণত হবে এবং এই সিস্টেমটা দাঁড়িয়ে যাবে।
টিকিট নিয়ে অসঙ্গতির বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু ই-টিকিটিং নতুন বিষয়, কিছু অসঙ্গতি আছে । এটা স্বাভাবিক হতে কিছু সময় লাগবে। আমরা আজ এ ব্যাপারে কোনো জরিমানা করিনি। তবে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২৩
এনবি/এমজে