ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মানবিকে পাস করেই বিমানের পাইলট!

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২৩
মানবিকে পাস করেই বিমানের পাইলট!

ঢাকা: মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করেছেন বিমানের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এয়ারক্রাফটের ‘পাইলট’ সাদিয়া ইসলাম। কিন্তু পদার্থ বিজ্ঞান, গণিতের মতো বিষয়ে পড়াশোনা না করে তিনি কীভাবে পাইলট হলেন, তা নিয়ে আছে প্রশ্ন।

সন্দেহ আছে সাদিয়ার নিয়োগ নিয়েও।

জানা গেছে, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে সাদিয়া ইসলাম নিয়োগ পেয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে তার বিষয়ে তদন্ত করতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

সোমবার (৬ মার্চ) এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক বিমানের ফ্লাইট অপারেশন্স ডিরেক্টর ক্যাপ্টেন সিদ্দিকুর রহমান। অপর দুই সদস্য হলেন- ফ্লাইট সেফটি বিভাগের প্রধান ক্যাপ্টেন ইনাম তালুকদার ও ডেপুটি চিফ অব ট্রেনিং তাপস আহমেদ। তাদেরকে আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। পাইলট সাদিয়ার উচ্চ মাধ্যমিকের সনদ জাল কিনা, তাও যাচাই করতে বলা হয়েছে তাদের।

মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করেছেন বিমানের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এয়ারক্রাফটের পাইলট হয়েছেন, এ দায় ছাড়াও সাদিয়ার বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ থাকায় তদন্ত কমিটিকে তা যাচাই করতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিমানের একটি নিয়োগে পাইলটসহ তড়িঘড়ি করে ১৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এক বছর পর তাদের মধ্যে পাঁচজন বিমান নিয়ে ওড়ার সুযোগ পান। অন্যান্যরা জাল সার্টিফিকেট, অযোগ্যতা, লাইসেন্সিং পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে চাকরিচ্যুত হন।

এই এক বছরে পাইলটদের প্রশিক্ষণ ও বেতন মিলিয়ে বিপুল অর্থ খরচ করে কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থার মধ্যেই সাদিয়া ইসলামের বিষয়টি প্রকাশ্যে এলো। জানা গেছে, সাদিয়া ইসলাম বিমানের চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের স্ত্রী। অভিযোগ আছে, সাজিদের চেষ্টা-তদবিরেই নিয়োগ পান তার স্ত্রী। এমনকি প্রভাব খাটিয়ে আত্মীয়-স্বজনদেরও বিমানে নিয়োগ পাইয়ে দিয়েছেন ক্যাপ্টেন সাজিদ।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলানিউজ কথা বলেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এম মাহবুব আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটি অভিযোগ সামনে এলে সেটার সত্য-মিথ্যা দেখতে হবে। যেকোনো কিছু হলে তো অভিযুক্তকে সুযোগ দেওয়ারও বিধান আছে।

প্রতিনিয়ত বিমানের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী আরও বলেন, সমালোচনার বিষয়টাকে ইতিবাচকভাবেই দেখা উচিত। দেশবাসীও চায় বিমান ভালো চলুক। যেসব অভিযোগ আসে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থাও নিই।

সাদিয়া ও তার নিয়োগের ব্যাপারে জানতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিউল আজিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে বাংলানিউজ। কিন্তু তিনি বিদেশে থাকায় সেটি সম্ভব হয়নি।

এ ছাড়া তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বিমানের ফ্লাইট অপারেশন্স ডিরেক্টর ক্যাপ্টেন সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা চলে। কিন্তু তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২৩
এমকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।