ঢাকা: "আকাশে বাঁকা চাঁদ, ঠিক তার নিচে শুকতারা। মনে হচ্ছে মেয়েদের কানের দুল!"
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় এমনই এক ক্যাপশন দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাঁদের ছবি শেয়ার করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা মাশায়েল অমি।
অবশ্য তিনি একা নন, চাঁদের ঠিক নিচে ‘তারার মতো’ কিছু একটা দেখে মানুষের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে দেশজুড়েই। অনেকেই ছবি তুলে তা শেয়ারও করেছেন সামাজিক মাধ্যমসহ প্রিয়জনদের সঙ্গে।
খবর পাওয়া গেছে, শুধু বাংলাদেশেই না, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। দৃশ্যটি দেখার পর কৌতূহলী মানুষ এ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। কেউ কেউ দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধারণও করেছেন।
এ বিষয়ে কথা হলে মাশায়েল অমি বলেন, চাঁদের নিচে এমনভাবে শুকতারা জীবনে এই প্রথম দেখলাম। বিভিন্ন মৌসুমে চাঁদের ভিন্ন ভিন্ন রূপ আমরা দেখি। আজকের চাঁদটা একদমই অন্যরকম। আবার কবে শুকতারা এমনভাবে ঝুলবে সেটা অজানা। দৃশ্যটা মন ভরে উপভোগ করেছি।
সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, আকাশে চাঁদ দেখেছি, তারাও দেখেছি; কিন্তু এমনভাবে চাঁদের নিচে এতো উজ্জল তারকা কখনও দেখিনি। সন্ধ্যায় বিষয়টি দেখার পর আমার কাছে বেশ ভালোই লাগে। তাই সবার সঙ্গে শেয়ার করতেই সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করি।
দেখা গেছে, সন্ধ্যার পর চাঁদ যত নিচে নেমেছে, ‘তারা সদৃশ’ বস্তুটিও নিচে নামছিল।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের নেটিজেনরাও জানিয়েছেন, তারাও ‘চাঁদের নিচে তারা’ এভাবে এর আগে কখনো দেখেননি। আর এটি নিয়ে রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে।
সূর্যাস্তের পরই দেখা যায়, একফালি চাঁদের ঠিক নিচে জ্বলজ্বল করছে একটি আলোকবিন্দু। সন্ধ্যা যত গড়িয়েছে ততই ছড়িয়েছে আলোচনা। চাঁদের (Moon) ঠিক নিচে ওটা কী? উজ্জ্বল এই আলোকবিন্দুকে ঘিরে তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। সঙ্গে চলছে আলোচনা- আসলে কী ওটা? কোনো তারা? কোনো গ্রহ? নাকি অন্য কিছু!
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন জানান, এই বিরল দৃশ্য বা গ্রহণ চাঁদে-সূর্যে নয়, বরং চাঁদে আর শুক্রে। এটা খুবই স্বাভাবিক নিয়মিত ঘটনা। পৃথিবীর কোনো জায়গা থেকে দৃষ্টিরেখা বরাবর যদি একই সরলরেখায় চাঁদ ও শুক্র এসে পড়ে, তাহলে চাঁদের আড়ালে শুক্রকে ঢাকা পড়তে দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, চাঁদের এরকম অন্য মহাজাগতিক বস্তুকে ঢেকে দেওয়াকে বলা হয় চাঁদের আড়াল।
শুক্র যখন চাঁদের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেছে, তখন বাংলাদেশ সময় ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা, খালি চোখেই তা দেখা গেছে।
বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাহমুদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, আসলে শুক্রগ্রহের আলোক ছটাতেই তৈরি হয়েছে ওই আলোর বিন্দু।
এদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে একই বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
এইচএমএস/এনএস