ঢাকা: ঈদুল ফিতরে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরাদের যাত্রা শুরু হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে যাত্রীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে রেলওয়ে।
রেলওয়ের এ ব্যবস্থাপনায় সঠিক টিকিটধারীদের যাত্রা স্বস্তির হচ্ছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন অনেক যাত্রী। তাদের সবারই বক্তব্য, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ছিল না। প্রথম দিনের যাত্রার শুরুটা স্বস্তির।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা গেছে, সুশৃঙ্খলভাবে যাত্রীরা নিজ নিজ প্ল্যাটফর্মে ঢুকছেন। এর আগে তাদের তিন দফা নিরাপত্তা তল্লাশির মধ্যে দিয়ে আসতে হয়েছে। প্রথমবারের মতো এমন ব্যবস্থাপনায় কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও যাত্রীরা সহজেই বিষয়টি মানিয়ে নেন। কিন্তু কেউ কেউ ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনারের (টিটিই) সঙ্গে অসদাচরণ করছেন, ধমকাচ্ছেন।
সোমবার সকাল ৬টায় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায় দিনের প্রথম ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেস। এটি যাবে রাজশাহী। এর মাধ্যমেই দিনের রেলযাত্রা শুরু হয়।
যেভাবে সেটশনে ঢুকছেন যাত্রীরা-
স্টেশনের শুরুতে রয়েছে বাঁশের তৈরি পাঁচটি জিকজ্যাক গেট। পাঁচটি গেটে ৫ টিটিই যাত্রীদের টিকিট ও এনআইডি পরীক্ষা করে দেখছেন। তাদের সহায়তা দিচ্ছেন রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর (আএনবি) সদস্যরা। দ্বিতীয় চেকিং হচ্ছে টিকিট কাউন্টারের সামনের অংশে, সেখানে রয়েছে ৩টি গেট। সবশেষে মেইন গেটে প্রবেশ পথে সন্দেহভাজনদের তৃতীয়বার তল্লাশি করা হচ্ছে।
জানা গেছে, সকাল পৌনে ৮টার দিকে প্রথম চেকিংয়ে একই পরিবারের ৪ আসনের যাত্রী আসেন। তবে যার নামে টিকিট, তিনি ওই ৪ জনের কেউ নন। ফলে টিটিইরা তাদের আটকে দেন। এ সময় তারা টিটিইকে শাসান; মন্ত্রীর পিএসকে কল করবেন বলেও জানান।
যিনি এহেন কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে তিনি নিজেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বলে পরিচয় দেন। ঘটনার সময় তিনি বলেন, আমার আইডি (রেলওয়ের সার্ভারে রেজিস্টার্ড আইডি) নষ্ট বলে ভাইয়ের আইডি দিয়ে টিকিট কেটেছি। আমি কেন এটা দিয়ে যেতে পারব না। টিকিট কাটা আছে যশোর পর্যন্ত, কিন্তু আমরা যাবো টাঙ্গাইল। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমি মন্ত্রীর পিএ’কে কল করবো।
এ সময় তার সঙ্গে থাকা অন্যজন বলেন, এতো কড়াকড়ি হলে চলবে? ধীরে ধীরে কড়াকড়ি করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে কমলাপুরের টিটিই বলেন, এ চারটি আসনের কোনো একজনের এনআইডিও যদি মিলে যেত আমরা হয়ত যেতে দিতে পারতাম। কিন্তু কারও এনআইডি মেলেনি। তা ছাড়া অন্য কেউ যদি এ আসনের টিকিট ও এনআইডি দেখায় আমাদের তাকেই যেতে দিতে হবে, আমরা নিয়মে বাধ্য।
তিনি জানান, প্রায় ৯৫ শতাংশ যাত্রীর টিকিটের সঙ্গে এনআইডির মিল আছে। ৫ শতাংশ যাদের মিল নেই, তাদের আমরা ফেরত পাঠাচ্ছি। আমাদেরকে এভাবেই নির্দেশনা দেওয়া আছে।
ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সফিকুর রহমান বলেন, স্টেশনে প্রবেশের জন্য একজন যাত্রীকে চার স্তরের চেকিং করতে হচ্ছে। যারা সত্যিকারের টিকিটের যাত্রী তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। যারা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে টিকিট সংগ্রহ করেছেন, তারা হয়তো অসুবিধায় পড়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় অন্যান্যবারের মতো যাত্রীদের ভিড় নেই। যে কারণে অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৭, এপ্রিল ১৭, ২০২৩
এনবি/এমজে