ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আদালতে প্রবাসীর হয়ে প্রক্সি দিতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন ব্যবসায়ী 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৩
আদালতে প্রবাসীর হয়ে প্রক্সি দিতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন ব্যবসায়ী  প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক ও আল আমিন তালুকদার

বাগেরহাট: বাগেরহাটের শরণখোলায় মারধরের মামলায় মূল আসামির পরিবর্তে (প্রক্সি) আদালতে জামিন নিতে এসে ফেঁসে গেছেন আল আমিন তালুকদার নামে এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ী।  

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে বাগেরহাট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিজেকে মূল আসামি প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক দাবি করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করেন ব্যবসায়ী আল আমিন তালুকদার।

 

আদালতের বিচারক ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ড. মো. আতিকুস সামাদ জামিন প্রার্থনা নামঞ্জুর করে আল আমিন তালুকদারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রক্সি দিতে আসা আল আমিন তালুকদার শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাজার এলাকার সুলতান তালুকদারের ছেলে। রায়েন্দা বাজার এলাকায় তার গার্মেন্টসের দোকান রয়েছে।

মামলার মূল আসামি উপজেলার পশ্চিম খাদা গ্রামের মৃত আব্দুস ছালাম শেখের ছেলে ফরিদ উদ্দিন মানিক বর্তমানে সৌদি আরব রয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২১ মার্চ বেলা ১১টার দিকে প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক ও তার লোকজন রায়েন্দা এলাকায় বাদী আব্দুস সালাম ও তার ভাইদের জমি দখল করতে আসেন। এসময় বাধা দিলে ফরিদ উদ্দিন মানিকের লোকজন বাদী আব্দুস সালামের লোকজনের ওপর হামলা করে। পরবর্তীতে আব্দুস সালাম বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিকসহ চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ৩১ মে চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে শরণখোলা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক ছাড়া অন্য আসামিরা আদালত থেকে জামিন নেয়। কিন্তু প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন মানিক গোপনে সৌদি আরব পাড়ি জমান।

মামলার বাদী আব্দুস সালাম বলেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমি মামলা করেছি। তবে প্রবাসীর পরিবর্তে অন্য ব্যক্তি আদালতে হাজির হয়ে কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে হতাশ করেছে। আমি আশাকরি আদালত এই ধরনের প্রতারকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অনিমা দেবনাথ বলেন, এক আসামির স্থানে অন্য আসামি আদালতে হাজির হওয়া ও জামিন নেওয়ার চেষ্টা আইনগতভাবে অনেক বড় অন্যায়। বাদীর মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঈদের ছুটির কারণে আদালতের কার্য্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে বলে জানান এই আইনজীবী।

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে, যাচাই-বাচাই করে কারাগার কর্তৃপক্ষও বিষয়টির সত্যতা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা কারাগারের সুপার এ এস এম কামরুল হুদা। তিনি বলেন, বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে।

বাদী পক্ষের আইনজীবীর দাবি এই মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান। তবে মনিরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি আইনজীবী থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী পুলিশ পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম বলেন, আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে আমরা বিয়য়টি অবগত হয়েছি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।