কুমিল্লা: কনটেইনারে করে মালয়েশিয়া যাওয়া বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সেই রাতুল ইসলাম ফাহিম (১৪) মারা গেছে।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) বাড়ির পাশের একটি পুকুরের পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়।
কিশোর রাতুল কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের দিনমজুর ফারুক মিয়ার ছেলে।
রাতুলের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতুল দুপুর আড়াইটার দিকে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে গোসল করতে পানিতে নামে। এসময় সে পানিতে ডুব দিয়ে আর উঠতে পারেনি। পরে আশপাশের লোকজন তার দেহ পুকুরে ভাসতে দেখে। লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের নিকট নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া জানান, রাতুল প্রতিবন্ধী। সে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। কন্টেইনারে করে মালয়েশিয়া যাওয়ার আগেও বাড়িতে আগুনে তার হাত-পা পুড়ে গিয়েছিল। ওই সময় অর্থসংকটের কারণে তাকে ভালোভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। দেশে ফেরার পরও সে বেশ অসুস্থ ছিল। দিনমজুরের কাজ করতে শনিবার বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে তার মরদেহ দেখতে পাই। রাতুল অসুস্থ থাকায় সে পানিতে ডুব দিয়ে আর উঠতে না পেরে মরে গেছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান হিরণ জানান, তিনি রাতুলের বাড়িতে গিয়ে দাফনের জন্য আর্থিক সহায়তা করেন। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে জানাজা শেষে রাতে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন রাতুল। গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ জাহাজের একটি খালি কনটেইনার মালেশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ১৬ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে জাহাজের একটি খালি কনটেইনারের ভেতর থেকে মানুষের শব্দ শুনতে পান নাবিকরা। এরপরই কেলাং বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান তারা। পরে ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কনটেইনার খুলে ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে টিভিতে প্রচারিত ছবি ও ভিডিও দেখে রাতুলকে শনাক্ত করে পরিবারের সদস্যরা। বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় রাতুল।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৩
এসএম