নীলফামারী: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ২২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা পরিশোধ করেও রেহাই পাননি মোকলেছার রহমান নামে এক কৃষক।
বর্তমানে ওই সুদ কারবারির মিথ্যা মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে পরিবারটি।
জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের মধ্য রাজিব চেংমারী গ্রামের মরহুম নজরুল ইসলামের ছেলে মোকলেছার রহমান পারিবারিক কারণে রনচণ্ডি ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে সুদ কারবারি মজনুর রহমানের কাছে ২০১৬ সালে প্রতি হাজারে ৬০ টাকা সুদে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা লোন নেন। সে অনুযায়ী কৃষক মোকলেছার দীর্ঘ ৬ বছর ধরে সুদ কারবারি মজনুর রহমানকে প্রতিশ্রুতি মতো মাসে ৩১ হাজার ২০০ টাকা সুদ দিয়ে এসেছেন। এমতাবস্থায় ২০২২ সালে করোনার সময় কৃষক মোকলেছার তার ব্যবহৃত চাষ করা ট্রাক্টর বিক্রি করে ওই সুদ কারবারিকে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। অবশিষ্ট ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার সময় চাইলে সুদ কারবারি ওই কৃষককে কোনো সময় দেওয়া যাবে না বলে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এমন কি টাকা দিতে না পারায় তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে টাকা আদায় করার হুমকিও দেন সুদ কারবারি মজনুর রহমান। ফলে মোকলেছার সুদ কারবারি মজনুর রহমানের হুমকিতে পরিবার নিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। বিষয়টি জানতে পেরে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ ওই কৃষককে উদ্ধার করে এবং সুদ কারবারি মজনুর রহমানকে থানায় ডেকে দুপক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা করে দেয়। কিন্তু ওই সুদ কারবারি থানার সমঝোতা অমান্য করে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে দলবলে বাড়িতে গিয়ে কৃষক মোকলেছারের বড় বোন বেলি বেগমের রূপালি ব্যাংক শাখার হিসাব নম্বর ২২৫৪৫ পাতা নম্বর ৬৯৬৫৭৬ একটি ফাঁকা চেকে জোর করে স্বাক্ষর নেন। এর আগে গত ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি একই ব্যাংক শাখার আরও একটি চেকের পাতায় মজনুর ও তার শ্যালক সাজেদুর রহমান মোকলেছারের স্ত্রী হেলালী বেগমের হিসাব নম্বরের একটি চেকের পাতায় জোর করে স্বাক্ষর নেন। যার হিসাব নম্বর ১৭৪৮১, পাতা নম্বর ৩৭৫৫০৬৩ জোর করে চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েও থেমে থাকেনি তারা। প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন। এবং তারা বলেন, তার দাবিকৃত টাকা না দিলে চেকের পাতায় নিজ হাতে ইচ্ছে মতো টাকার অংক বসিয়ে মামলা করব।
কৃষক মোকলেছার রহমান বলেন, সুদ কারবারি মজনুর এলাকায় প্রচার করে আমার স্ত্রী হেলালী বেগমের নামে নীলফামারী কোর্টে একটি চেক ডিজঅনারের মামলা করেছে। মামলার এজাহারে সুদ কারবারি মজনুর কৃষক মোকলেছারের স্ত্রী হেলালীর কাছে ১২ লাখ টাকা পাওনা বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে সুদ কারবারি মজনুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফানে একাধিকার কল করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কিশোরগঞ্জ থানার ওসি রাজিব কুমার রায় বলেন, মোকলেছার রহমানের পরিবার অবরুদ্ধ হওয়ার সংবাদ পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের উদ্ধার করেছিলাম এবং দুপক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি সুরাহা করে দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি সুরাহার পরেও সুদ কারবারি মোকলেছারের স্ত্রী হেলালীর নামে কোর্টে মামলা করেছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এখনো মামলার কোনো কপি থানায় আসেনি। মামলার কপি পেলে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২৩
আরএ