ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মনোহরদীতে দম্পতিকে আটকে স্বর্ণালংকার লুট, মেয়রের পিএস আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
মনোহরদীতে দম্পতিকে আটকে স্বর্ণালংকার লুট, মেয়রের পিএস আটক মাছুম হাসান শুভ: ফাইল ফটো

নরসিংদী: নরসিংদীর মনোহরদী পৌর মেয়র আমিনুর রশিদ সুজনের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মাছুম হাসান শুভর বিরুদ্ধে দম্পতিকে আটক করে মারধর ও স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ উঠছে।  

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযুক্ত মাছুম হাসান শুভকে আটক করে।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেল ৩টায় উপজেলার আনোয়ার সিএনজি স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।

রাতেই ভুক্তভোগী হারুনুর রশিদ ধ্রুব বাদী হয়ে শুভসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৩ থেকে ৪ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর শুক্রবার (১২ মে) মামলাটি নথিভুক্ত করে আসামি শুভকে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন।

মাছুম হাসান শুভ মনোহরদী শহর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক।

জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের বায়োজিদ গোস্তামী এলাকার মৃত আবুল বাশারের ছেলে হারুনুর রশিদ ধ্রুব ঢাকার বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভির সহকারী প্রোগ্রাম প্রডিউসার হিসেবে কর্মরত আছেন। ৩ বছর আগে তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের বারাব গ্রামের পুলিশ সদস্য হারুনুর রশিদের মেয়ে রেশমা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ঢাকার ফার্মগেটে বসবাস করেন।

হারুনুর রশিদ ধ্রুব জানান, তিনি গত বুধবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বেড়াতে আসেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ত্রীর জন্য ত্রি-পিস কিনতে ভগ্নিপতি মোসাদ্দেকের সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে মনোহরদী বাজারে যান। সেখান থেকে বিকেল ৩টার দিকে অটোরিকশায় গ্যাস ভর্তি করতে তারা আনোয়ার সিএনজি স্টেশনে যায়। গ্যাস ভর্তি শেষে সিএনজি স্টেশন থেকে বের হওয়ার সময় হঠাৎ ৭ থেকে ৮ জন যুবক তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বিভিন্ন অশ্লীল গালাগাল ও নানা ধরনের হুমকি দিতে থাকে। একপর্যায়ে পৌর মেয়রের পিএস শ্রমিক লীগ নেতা শুভ এসে তাদের নানা ধরনের প্রশ্ন করতে থাকে। প্রশ্নের উত্তর দিতে আপত্তি করায় ধ্রুবের স্ত্রী রেশমার গালে থাপ্পড় মারে শুভ। ওই সময় হামলাকারীরা রেশমার গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ও ধ্রুবের কাছ থেকে দুটি সোনার আংটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

প্রকাশ্যে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও ভয়ে উপস্থিত কেউ এগিয়ে আসেনি। উল্টো হামলাকারীরা তাদের বিয়ের কাবিন না দেখালে যেতে দেবে না বলে সিএনজি স্টেশনের একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে মোবাইলে কাবিনের ছবি দেখালে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

পরে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে ভীতসন্তস্ত্র হয়ে ভুক্তভোগীরা জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশি সহযোগিতা চান। এরপর পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।

হারুনুর রশিদ ধ্রুব বলেন, আমি জীবনে এমন ভীতিকর পরিস্থিতিতে কখনোই পড়িনি। ওই সময়টুকু এখনো মনে হলে আমি আতকে উঠি। তারা আমার সামনে আমার স্ত্রীর গালে থাপ্পড় দিয়েছে। স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। তবে আমরা সাধারণ মানুষ আইনি ঝামেলা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছি।

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন  বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে সিসিটিভি পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।