মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের রুবেল নামের এক প্রতিবন্ধীর ভাতার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলার সাটুরিয়া উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে অনেক প্রতিবন্ধীর ভাতার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে উত্তোলন করে নিয়ে গেছে কে বা কারা।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায় , সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের তারাবারী এলাকার মো. আবুল হোসেনের প্রতিবন্ধী ছেলে রুবেলের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে ভাতার টাকা আসে। সে টাকা না তুলে এক সঙ্গে তুলবে বিধায় জমাতে থাকে ভাতার টাকা কিন্তু গত ২০ মার্চ দুপুর ১২টা ৩৮ মিনিটে হ্যাকাররা এ নাম্বারে ( ০১৯০৬-৪৯৪৬০৫) ৯ হাজার ৫০০ টাকা ট্রান্সফার করে। ফকুরহাটি ইউনিয়নের সাইপাড়া এলাকার লাইলী আক্তার গত এপ্রিল মাসের ২০ তারিখ রাত ৯টা ৫৪ মিনিটে সরকারের দেওয়া প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’এর মাধ্যমে পান । আর সেই টাকা তার টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে গেছে।
অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে আসে গত এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ রাত ১০টা ৪ মিনিটে হ্যাকাররা ( ০১৭৯৫-৩৮৫৮০০ ) এ নাম্বারে টাকা নিয়ে নেয়। সর্বশেষ মোবাইলে থাকা অবশিষ্ঠ ৫০ টাকাও একই তারিখে রাত ১১টা ১৯ মিনিটে ( ০১৮৩০-৮০৩০৪২ ) এ নাম্বারে রিচার্জ করে নেয় হ্যাকাররা।
প্রতিবন্ধী রুবেলের ভাই সোহেল বলেন, আমার ভাই প্রতিবন্ধী বিধায় সরকার তাকে ২৫০০ টাকা করে ভাতা দিয়ে থাকে আর এ ভাতার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে আসে। এক সঙ্গে করে টাকা উত্তোলন করবে বলে অ্যাকাউন্টে রেখে দেওয়া হয়ে ছিলো । চলতি মাসে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দেখি মোবাইলে কোন টাকা নেই।
লাইলী আক্তারের অভিভাবক জুয়েল মিয়া বলেন, মোবাইলে টাকা এসেছে ঈদের আগে, টাকা তুলতে যাই ঈদের পরে আর ওখানে গিয়ে জানতে পারি অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই।
ওই একই এলাকার নাম পরিচয় প্রকাশ না করার মর্মে একাধিক ব্যাক্তিরা বলেন ,সরকার প্রতিবন্ধীদের কথা চিন্তা করে একটি ভাতার ব্যবস্থা করেছেন এটা প্রশংসনীয় বিষয়। এই প্রতিবন্ধীর টাকা মেরে দিচ্ছে হ্যাকাররা, কার নামে প্রতিবন্ধী কার্ড আছে, কবে টাকা পাচ্ছে এ বিষয়গুলোতো কোনো না কোনো অফিস থেকেই তথ্য পাচ্ছে তারা ( হ্যাকার )। সমাজসেবা অফিসে গেলে বিভিন্ন আশার বাণী শুনান তারা কিন্তু কোনো সমাধান দেয় না।
সাটুরিয়া সমাজসেবা অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, মাঝে মাঝে লোকজন আসেন তাদের টাকা উধাও হয়ে গেছে আবার অনেকে বলছে অফিস থেকে ফোন দিয়ে ছিলো ওটিপির জন্য। যখন বলি কোন নাম্বার থেকে ফোন দিয়েছিল এবং সেই নাম্বার দিলে, আমরা ফোন দেই কিন্তু তা বন্ধ পাই। আমরা বারবার বলেছি কারো ফোনে আপনারা আপনাদের অ্যাকাউন্টের ওটিপি দেবেন না।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. সিরাজ উদ্দিনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য অফিসে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২৩
জেএইচ