ঢাকা: ‘তোমার চোখে বিশ্ব দেখি’ স্লোগান নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল রংধনু গ্রুপ মালিকানাধীন গ্রিন টেলিভিশন।
শুক্রবার (১৯ মে) সন্ধ্যায় ঢাকার কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি, হল-৩) বর্ণাঢ্য আয়োজনে যাত্রা শুরু করে দেশের ৩৯তম এই বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল।
চ্যানেলটির উদ্বোধনকালে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন সরকারের মন্ত্রীপরিষদের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা, ব্যবসায়ী, লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, অভিনেতা-অভিনেত্রী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সবার সরব পদচারণায় এদিন (১৯ মে) সন্ধ্যা থেকেই মুখর হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল।
অভিনেতা ফেরদৌস ও অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলার যৌথ উপস্থাপনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আজকে গ্রিন টিভি নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। বিশেষ করে তারা তরুণদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিবাচক ও সঠিক ইতিহাস তুলে ধরবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। আমরা যেন ভুল সংবাদ প্রচার না করি সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এতে চ্যানেলের বিশ্বাসযোগ্যতা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
উদ্বোধকের বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের সময়ে গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করছে। সরকার গণমাধ্যমকে কোনোরকম নিয়ন্ত্রণ করেনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রয়োজন। এজন্য সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে আমাদের সরকারের হাত ধরেই দেশে বেসরকারি টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয়। গ্রিন টিভি সম্প্রচারের মাধ্যমে দেশে ৩৯টি টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু করল। আমরা ৪৬টি টেলিভিশনের লাইসেন্স দিয়েছি। গত সোয়া ১৪ বছরে দেশের গণমাধ্যমের গাণিতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আগে ৪৫০টি দৈনিক পত্রিকা ঢাকা থেকে প্রকাশিত হতো। এখন সেখানে ১২৫০টি। আমরা কমিউনিটি রেডিওর অনুমোদন দিয়েছি ২৪টি।
এসময় মন্ত্রী গ্রিন টিভির উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল তার বক্তব্যে বলেন, দেশে সরকারের সম্ভাবনা ছড়িয়ে রয়েছে। আমি আশা করি, গ্রিন টিভি আমাদের সাফল্যের সঙ্গে ব্যর্থতাও তুলে ধরবে। আমরা বাংলাদেশেকে এমন একটি জায়গা করে দিতে চাই, যেখানে সাংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। গণমাধ্যম স্বাধীন হলেই স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হবে।
এসময় রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান ও গ্রিন টিভির উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রগতিতে নতুন এক পথের সন্ধান পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শাসনামলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হয়েছে। আমরা এমন একটি গণমাধ্যম চেয়েছিলাম, যা মানুষকে সম্পৃক্ত করবে। মানুষের সমর্থন ও ভালোবাসা নিয়ে লাল-সবুজের বাংলাদেশে গ্রিন টিভি এগিয়ে যাবে।
এসময় দেশের বাইরে অবস্থান করায় গ্রিন টিভির চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর নিশাত চৌধুরীর লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান উপস্থাপিকা মাসুমা রহমান নাবিলা। নিশাত চৌধুরী তার বক্তব্যে টেলিভিশন চ্যানেলটির লাইসেন্স দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, গ্রিন টিভি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তব্য দেন গ্রিন টিভির পরিচালক ও এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি আমির হেলাল। তিনি বলেন, টেলিভিশন হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় গণমাধ্যম। সাধারণ দর্শকদের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হলে সৃষ্টিশীল হতে হবে। আমরা সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করব। বিনোদন ও খবরে হবো প্রজ্ঞাবান।
গ্রিন টিভির পরিচালক বলেন, এখন দেশের অধিকাংশ মানুষ ভারতীয় চ্যানেলের প্রতি আকৃষ্ট। আমরা আমাদের দর্শককে দেশের চ্যানেলমুখী করবো।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মত-পথের পার্থক্য থাকবে। পক্ষপাতহীনভাবে আমরা এগিয়ে যাব। আমরা জাতীয় স্বার্থকে সবার ঊর্ধ্বে তুলে ধরব।
গ্রিন টিভি দেশের মানুষের সঙ্গে সৃষ্টিশীল বন্ধন গড়ে তুলবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের চেয়ারম্যান ড. শাহজান মাহমুদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৪ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২৩
ইএসএস/এনএস