ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হুমকিতে রায়গঞ্জ পৌরসভার সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৯ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৩
হুমকিতে রায়গঞ্জ পৌরসভার সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প

সিরাজগঞ্জ: কারখানা থেকে নিঃসৃত বিষাক্ত বর্জ্যে ফুলজোড় নদীর পানি দূষিত হওয়ায় হুমকিতে পড়েছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ পৌরসভার সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প।  

জানা যায়, বাংলাদেশের ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন, ড্রেন ও পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় রায়গঞ্জ পৌর এলাকায় ফুলজোড় নদীর পানি পরিশোধন করে পৌরবাসীর মধ্যে সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্পটি চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার, বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে ৩০ কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর। ফুলজোড় নদীর তীরে পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডে পালপাড়ায় চলছে এই প্রকল্পের কাজ।  

২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ইতোমধ্যেই এর ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল।  

রায়গঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল পাঠান জানান, প্রকল্পটির মাধ্যমে পরিশোধিত পানি পাইপ লাইন দিয়ে দুই হাজার পৌরবাসী মধ্যে সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু নদীর উজানের বিভিন্ন কল-কারখানার নির্গত বিষাক্ত বর্জ্যে ফুলজোড় নদীর পানি মারাত্মক দূষিত হওয়ায় প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন দুরূহ হয়ে পড়ল। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।  

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক দীপক কুমার কর বলেন, পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার শেরপুরে স্থাপিত বেশ কয়েকটি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি ফুলজোড় নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে নদীর মাছ, শামুক, ঝিনুকসহ জলজপ্রাণি মরে ভেসে উঠছে। তীরবর্তী মানুষেরা নদীতে গোসল করতে পারছে না, গবাদি পশু নামতে পারছে না। জমিতে সেচও দিতে পারছে না। ফুলজোড়ের পানি দূষিত হওয়ায় নদীপারের মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে বিঘ্ন হচ্ছে। বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর রায়গঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, নদীর পানি উত্তোলন করে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের (ডাব্লিউটিপি) মাধ্যমে সুপেয় করে পাইপ লাইনে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। সম্প্রতি নদীর পানি এত বেশি দূষিত হয়ে পড়েছে যে নদীর মাছসহ বিভিন্ন জলজপ্রাণি মরে ভেসে উঠছে। এই পানি আমাদের এই ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে সুপেয় করা সম্ভব নয়।  

পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাজিয়া সুলতানা জানান, খবর পেয়ে তিনি ফুলজোড় নদী সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন এবং বিষাক্ত পানির স্যাম্পল সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করতে দিয়েছেন। নদীর পানি দূষণ রোধে যথা শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৩

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।