ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে শিশু সায়েল হত্যায় চাচির যাবজ্জীবন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
সিলেটে শিশু সায়েল হত্যায় চাচির যাবজ্জীবন আদালতের রায়: প্রতীকী ছবি

সিলেট: সিলেটের বিয়ানীবাজারে শিশু সায়েল আহমদ হত্যার পর গুম করার অপরাধে চাচি সুরমা বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে রায়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

রায়ে পেনাল কোডের আরেকটি ধারায় তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড, ১ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। উভয় সাজা একত্রে চলার নির্দেশ দেন বিচারক।

মামলায় অপর দুই আসামি নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিম ও রুনু মিয়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২৮ মে) সিলেটের সিনিয়র দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত সুরমা বেগম (৪১) সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার উত্তর আকাখাজানা গ্রামের রুনু মিয়ার স্ত্রী।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. নিজাম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৭ জুন ভোর ৬টার দিকে মামলার বাদী উত্তর আকাখাজানা গ্রামের খসরু মিয়ার শিশু সন্তান আরিফ আহমদ (৫) ও সাড়ে ৩ বছরের সায়েল আহমদ আম কুড়াতে যায়। একপর্যায়ে চাচি সুরমা বেগমের অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে সবার কাছে বলে দেবে বলায় বলে জানায় দেবরের ছেলে শিশু সায়েল আহমদ। প্রমাণ না রাখতে শিশুটিকে হত্যার পর মরদেহ গুম করতে ঘরের বাথরুমে প্লাস্টিকের ড্রামে কম্বল দিয়ে মোড়ে রাখেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ঘটনার দিন সকাল ৭টার দিকে আরিফ ঘরে ফিরলেও সায়েল ঘরে না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। পুকুরে জাল ফেলেও না পাওয়ায় সুরমা বেগমকে সাহেলের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তার কথাবার্তা সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে সুরমা বেগমের ঘরের বাথরুমের প্লাস্টিকের ড্রামে কম্বল মোড়ানো অবস্থায় সাহেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সুরমা বেগমকে আটক করে। এরপর পুলিশকে সুরমা বেগম জানান, অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে সবার কাছে বলে দেওয়ার কথা বলায় প্রমাণ না রাখতে দেবরের ছেলে শিশু সায়েল আহমদকে হত্যার পর মরদেহ ঘরের বাথরুমে প্লাস্টিকের ড্রামে কম্বল দিয়ে মোড়ে রাখেন।

এ ঘটনায় শিশুটির বাবা খসরু মিয়া ২০২০ সালের ৮ জুন সুরমা বেগম, তার পরকীয়া প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিম ও স্বামী রুনু মিয়াকে আসামি করে হত্যা ও গুমের অপরাধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ৩ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ২৭ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানি ও ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক রায়ে সুরমা বেগমকে দণ্ডিত করেন। পরকীয়া প্রেমিক বিয়ানীবাজারের চারখাই গ্রামের কামাল মিয়ার ছেলে নাহিদুল ইসলাম ওরফে ইব্রাহিম (২৯), আকাখাজানা গ্রামের রইছ আলীর ছেলে রুনু মিয়ার (স্বামী) অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।

মামলায় আসামি সুরমা বেগমের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট প্রসেন কান্তি চক্রবর্তী, নাহিদুল ইসলামের পক্ষে অ্যাডভেকেট পারভীন বেগম লিজা, রুনু মিয়ার পক্ষে লড়েন অ্যাডভোকেট মো. শাহীন আহমদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
এনইউ/জেএইচ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।