ঢাকা: চাকরির নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন ফি বাতিল চায় বাংলাদেশ বেকার সম্প্রদায়। এ দুটি বিষয়সহ শুক্রবার (১ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে ৪ দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনের নেতারা।
বেকার সম্প্রদায়ের দাবিগুলো হলো- ঢাকাসহ প্রত্যেক বিভাগ ও জেলা শহরে পর্যাপ্ত পরিমাণ বেকার হোস্টেল করা এবং প্রত্যেক বেকারকে বেকার ভাতা দেওয়া; সব চাকরির আবেদন ফি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন ফি বাতিল করা; ৩য় এবং ৪র্থ শ্রেণির চাকরিতে (১১-২০ গ্রেড) পিএসসি’র আদলে জাতীয় নিয়োগ বোর্ড গঠন করে নিয়োগ; বেকারকে উদ্যোক্তা তৈরিতে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া এবং চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা যৌক্তিকতার ভিত্তিতে বৃদ্ধি করা।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ বেকার সম্প্রদায়ের সভাপতি মো. আল কাওছার মিয়াজী বলেন, ঢাকাসহ প্রত্যেক বিভাগ জেলা শহরে বেকারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আবাসন সমস্যা। বেকার বা ব্যাচেলরদের বাড়িওয়ালারা বাসা ভাড়া দিতে চায় না, আর দিলেও হাজারো শর্ত জুড়ে দেয়। এমনকি বাসা ভাড়াও কয়েকগুণ বেশি দিতে হয়। বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক দেশে বেকারদের জন্য বেকার হোস্টেল রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও কলকাতার বেকার হোস্টেলে থাকতেন। তাই বর্তমানে দেশে বেকার হোস্টেলের কোনো বিকল্প নেই।
বেকারদের জন্য বিশ্বের প্রত্যেক দেশে বিশেষ সুযোগ সুবিধা থাকলেও কেবল বাংলাদেশই ব্যতিক্রম। যেখানে বেকার ভাতা তো দূরের কথা, তাদেরকে হেয় করে দেখা হয়। সে কারণে প্রতি বছর অনেক বেকারকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয়। বাংলাদেশে যদি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বৈশাখী ভাতা ইত্যাদি চালু থাকতে পারে তাহলে বেকার ভাতা কেন নয়? তাই উন্নত বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও বেকার ভাতা চালু করার দাবি জানাই।
বাংলাদেশ বেকার সম্প্রদায়ের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম সরকার বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে চাকরিতে আবেদনের কোনো ফি নেওয়া হয় না। সেখানে বাংলাদেশ যেন আবেদন ফি নেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি আবেদন ফি ব্যতীত পরীক্ষা নিতে পারে তাহলে অন্য ব্যাংক, মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের কেন ফি নিতে হবে? সময় এসেছে পরিবর্তনের। যেহেতু তাদের প্রয়োজনে তারা নিয়োগ দেবে, তাই পরীক্ষার ব্যয় তাদেরকেই বহন করতে হবে।
বাংলাদেশ বেকার সম্প্রদায়ের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম নায়েক বলেন, শিক্ষাকে যদি জাতির মেরুদণ্ড বলা হয়ে থাকে তাহলে শিক্ষার মেরুদণ্ড হলো বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার মানে পিছিয়ে থাকলেও ভর্তির আবেদন ফি নিতে মোটেও পিছিয়ে নেই।
বাংলাদেশ বেকার সম্প্রদায়ের সহসভাপতি মো. সবুজ হাওলাদার বলেন, একদিনে একজন চাকরি প্রার্থী সর্বোচ্চ একটি বা দুটি পরীক্ষা দিতে পারে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আমাদের দেশের মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর ও স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কোনো সমন্বয় না থাকায় একই দিনে ২০-২৫, এমনকি ২৬টি পরীক্ষা নেওয়ারও নজির রয়েছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেকার সম্প্রদায়ের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ. আ. ম. আশিকুর রহমান, অর্থ সম্পাদক মো. আলমগীর বাইসারী, প্রচার সম্পাদক মো. রুমান গাজী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২৩
এসসি/এমজে