ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ধর্ষণের পর হত্যার হুমকি, এসএস‌সি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৩
ধর্ষণের পর হত্যার হুমকি, এসএস‌সি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা

বরিশাল: পটুয়াখালীর গলাচিপায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মারুফা আক্তার (১৬) নামে সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া এক কিশোরী।

গত রোববার (৪ জুন) বিকেলে সবার অজান্তে ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই কিশোরী।

পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন মঙ্গলবার (৬ জুন) ভোরে মারুফার মৃত্যু হয়।

মৃত মারুফা আক্তার গলাচিপা উপজেলার চিকনকান্দী ইউনিয়নের কোটখালী এলাকার মৃত আবু সালেহের মেয়ে এবং স্থানীয় বাঁশবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে সদ্য অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে।

মারুফার বোন তামান্না আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমাদের পাশের বাড়ির বাসিন্দা ও দুই সন্তানের জনক কামাল হোসেন নুহু হাওলাদার (৪০) কোটখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি পদে চাকরি করে। তিনি প্রায় এক বছর ধরে আমার বোনকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। গত শুক্রবার (২ জুন) রাতে মারুফা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বসত ঘরের বাইরে টয়লেটে যায়। ওই সময় আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা নুহু হাওলাদার তাকে মুখ চেপে ধর্ষণ করে।

তামান্না আক্তার আরও বলেন, বিষয়টি প্রথমে আমরা জানতাম না। ঘটনার পর মারুফা কথা বলা ও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিলে মা আমাকে বিষয়টি জানান।

গত রোববার (৪ জুন) আমি মারুফাকে নিয়ে আমার আরেক বোনের বাসায় যাই। সেখানে গিয়ে মারুফা ধর্ষণের বিষয়ে আমাদের জানিয়ে বলে, বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে নুহু হাওলাদার।

পরে (৪ জুন) বিকেলে বোনের বাসা থেকে নিজেদের বাড়িতে এসে পরিবারের সবার অজান্তে ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি।

হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন মঙ্গলবার (৬ জুন) ভোরে মারুফার মৃত্যু হয় জানিয়ে বড় বোন তামান্না বলেন, এ ঘটনায় আমার মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের জন্য গিয়েছেন।

তবে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোণিত কুমার গাইন।

এদিকে বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন কোটখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল-মামুন। তিনি বলেন, বিষয়টি লিখিতভাবে জানালে সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত দপ্তরি নুহু হাওলাদারের বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মিরাজ মোল্লা জানান, কিশোরীর সুরতহাল প্রতিবেদন করতে গিয়ে পায়ের নিচে কালো দাগ দেখা গেছে। ধর্ষণের বিষয়টি পরিবার জানিয়েছে। বাকিটা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে জানা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৩
এমএস/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।