ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভিজিএফের সুবিধাভোগীদের পেটানোর অভিযোগে নলডাঙ্গা পৌর মেয়রের নামে মামলা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৯ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
ভিজিএফের সুবিধাভোগীদের পেটানোর অভিযোগে নলডাঙ্গা পৌর মেয়রের নামে মামলা 

নাটোর: ঈদুল আজহা উপলক্ষে নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভায় ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় সুবিধাভোগীদের পেটানোর অভিযোগে পৌর মেয়র মনিরুজ্জামানসহ ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে।  
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দিনগত রাতে আহত মিঠুনের মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলা নম্বর-১৩।  
বাদী মর্জিনা বেগম পৌরসভার পূর্ব সোনাপাতিল গ্রামের মৃত ভুট্টর স্ত্রী।  
মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ছয়জনের। তারা হলেন-মেয়র মনিরুজ্জামান, মেয়রের আপন ভাতিজা উপজেলার ছাতারভাগ (ডাকাতিভিটা) গ্রামের বকুল হোসেন মণ্ডলের ছেলে মো. সাগর মণ্ডল (৩০), ব্রক্ষ্মপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে রহিদুল ইসলাম (৪৫) এবং তার ছেলে নিশান প্রামাণিক (২২), নীলডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মজিদেও ছেলে মো. রুবেল (৩৫) ও হলুদঘর জাঙ্গালপাড়া গ্রামের মৃত হেফাজুর রহমানের ছেলে মো. মিলন (৩৮)।  

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, একই দিন দুপুর ১টার দিকে পৌরসভা চত্বরে দুস্থদের মধ্যে ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় সুবিধাভোগীদের পেটান পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান ও তার লোকজন। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে চারজনকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  

নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মেয়র মনিরুজ্জামানসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে আট থেকে ১০ জনকে অভিযুক্ত করে মামলাটি হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকাল থেকে নলডাঙ্গা পৌরসভার ৪ নম্বর ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুস্থদের মধ্যে ভিজিএফের চাল বিতরণ চলছিল। এসময় চাল নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৪৫০ মানুষ।  
মামলায় বলা হয়, দুপুর একটার দিকে বিশৃঙ্খলার অজুহাতে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাপাতিল মহল্লার বাসিন্দা শাহিন, জেলার, রকি,নয়ন, মিঠুন, রানা, মর্জিনা, নলডাঙ্গার রাজিব, আশিক, পূর্বসোনাপাতিল মহল্লার আলমঙ্গীর, মনিরুল, হলুদঘর মহল্লার স্বাধীনসহ অন্তত ২০ জন লাইনে দাঁড়ানো সুবিধাভোগীকে হাতুরি ও কাঠ দিয়ে বেদম মারপিট করে পৌরসভা থেকে বের করে দেন মেয়র মনিরুজ্জামান ও তার লোকজন। এ অবস্থায় লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদের ওপরও চড়াও হন তারা। এসময় ক্ষুরের আঘাতে মনিরুল ইসলামসহ চারজন আহত হন। আহত চারজনকে  নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।  

পৌর মেয়র মনির নলডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।  

নলডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম পিয়াস বাংলানিউজকে জানান, পৌরসভার নানাবিধ অনিয়মের প্রতিবাদ করাসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের সঙ্গে তার বিরোধ চলছে। এর জেরে বৃহস্পতিবার তার ওয়ার্ডের সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের ওপর মেয়র ও তার সহযোগী রহিদুল, নিশান, মিলন, রুবেল. সাগরসহ কয়েকজন হামলা করেন। ঘটনার সময় তিনি নিজেও পৌর কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। এসময় তিনি বাধা দিতে গেলে তার দিকে তেড়ে আসেন মেয়র ও তার সমর্থকরা।  

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছেও অভিযোগ দেওয়া হবে।  

নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে দাবি করে বাংলানিউজকে জানান, চাল বিতরণের সময় কয়েকজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিলেন। তারা চাল নিয়ে ঘরের মধ্যে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় অন্যদের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য তাদের চলে যেতে বললে তারা খারাপ আচরণ করেন।  

তিনি আরও জানান, এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মারপিট বা ক্ষুর দিয়ে আঘাতের ঘটনা ঘটেনি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। তার সঙ্গে শরিফুল ইসলাম পিয়াসের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। মামলা সর্ম্পকে জানতে রাতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩ 
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।