ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদের দুদিনের মধ্যে কোরবানি সম্পন্ন করুন: ডিএসসিসি মেয়র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২৩
ঈদের দুদিনের মধ্যে কোরবানি সম্পন্ন করুন: ডিএসসিসি মেয়র ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: রাজধানীবাসীকে ঈদের দুই দিনের মধ্যে পশু কোরবানি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে অনুরোধ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। সোমবার (২৬ জুন) নগর ভবনের শীতলক্ষ্যা হলে দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি পরিচালন কেন্দ্র (ইওসি) উদ্বোধন শেষে তিনি এ অনুরোধ করেন।

তাপস বলেন, দীর্ঘদিনের একটি প্রচলন রয়েছে ঈদের তৃতীয় দিনও অনেকে কোরবানির পশু জবাই করেন। এতে আমাদের কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা দুরূহ হয়ে যায়। কারণ সবাই তো এক সময় কোরবানি দেয় না। একেক জন একেক সময় দেয়। আমরা এক সময় বর্জ্য অপসারণ করার পরও আবার দেখা যায় অন্যরা পশু জবাই দেয়। তাই সবাই যেন ঈদের দিন এবং ঈদের পরের দিনের মধ্যেই কোরবানির পশু জবাই এবং কোরবানির কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। যাতে করে আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারণ করতে পারি।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমাদের যে প্রস্তুতি, সেটি চলমান। এ নিয়ে আমাদের সভা রয়েছে। গতবার আমরা কোরবানির বর্জ্য অপসারণে যেভাবে সফল হয়েছি, এবারও সেই সুফল আমরা ঢাকাবাসীকে দিতে পারবো। কোরবানির বর্জ্য অপসারণের সব প্রস্তুতি আমরা প্রায় শেষ করেছি।

দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি পরিচালন কেন্দ্র উদ্বোধনের বিষয়ে মেয়র তাপস বলেন, আজকে আমার অত্যন্ত আনন্দিত দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে। আমরা একটি উচ্চ পর্যায়ের অবস্থান করতে পেরেছি। আজকে দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি পরিচালন কেন্দ্রসহ পাঁচটি কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির উচ্চ শিখরে পৌঁছতে পেরেছি। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানাই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে রূপকল্প দিয়েছেন তারই অংশ হিসেবে স্মার্ট ঢাকা গড়ার একটি নতুন ধাপে আমরা উন্নীত হতে পেরেছি। এই জরুরি পরিচালন কেন্দ্র অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলার তাৎক্ষণিক তথ্যগুলো আমরা দেখতে ও জানতে পারবো। যেমন- এখন যদি বাংলাদেশসহ বিশ্বের কোথাও হয় ভূমিকম্প হয়, সেই তথ্যটি আমরা তাৎক্ষণিক পেয়ে যাবো। তেমনি বন্যা ও আবহাওয়াসহ যেকোনো দুর্যোগের তথ্য আমরা এই পরিচালন কেন্দ্রে পেয়ে যাচ্ছি।

শেখ ফজলে নূর তাপস আরও বলেন, যেহেতু দুর্যোগ অত্যন্ত জরুরি বিষয়, এজন্য তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কি জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে বা কি জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন সেগুলোর বিচার, বিশ্লেষণ, পর্যালোচনা কিন্তু এখানে বসেই আমরা করতে পারবো। সুতরাং আজকে এই জরুরি পরিচালনা কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা দুর্যোগ মোকাবিলায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হলাম। এখন থেকে আমরা এই পরিচালন কেন্দ্রের মাধ্যমে যেকোনো দুর্যোগ পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী কার্যক্রমগুলো এখান থেকে পরিচালনা ও তদারকি করতে পারবো।

আমরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নয়জন কাউন্সিলরের মাধ্যমে আমরা দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থায়ী কমিটি গঠন করেছি। দুর্যোগ পরবর্তী সভা করেছি। সেখানে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠসহ যে খোলা জায়গাগুলো রয়েছে, সেগুলো আমরা জিআইএস ম্যাপের মাধ্যমে সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা সেগুলো ব্যবহার করবো। যাতে দুর্যোগের সময় আমাদের এলাকাবাসী সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। পরবর্তীতে যাতে সেখান থেকে আমরা উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারি।

এবার পবিত্র ঈদুল আযহার কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম এই জরুরি পরিচালন কেন্দ্র থেকে পরিচালনা করবো। মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমও আমরা এখান থেকে পরিচালনা করতে পারবো। এর বাইরেও সব ধরণের কার্যক্রমে এই জরুরি পরিচালনা কেন্দ্র অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

আমরা ইতোমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে ২০০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক গঠনের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। তাদেরকে আমরা জরুরি প্রশিক্ষণ ও মহড়া দেব। যাতে তারা যেকোনো দুর্যোগে তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ ও ব্যবস্থা নিতে পারে। আমরা আমাদের ব্যাপক কার্যক্রমের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেসব নিয়ম শৃঙ্খলা পালন করা হয় সেসব বিষয়ে দক্ষ ও পারদর্শী হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছি। এভাবে সামগ্রিক দুর্যোগ মোকাবিলায় একটি আমূল পরিবর্তন আমরা ঘটাতে পারবো।

এ সময় ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, আরবান রিজিলিয়েন্স প্রকল্পের পরিচালক আরিফুর রহমানসহ করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রাকৃতিকসহ যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও সিলেট সিটি করপোরেশনে তৈরি করা হয়েছে জরুরি পরিচালন কেন্দ্র। যার ডিএসসিসি অংশ আজ উদ্বোধন করা হলো। এর নাম আরবান রিজিলিয়েন্স প্রকল্প। যার অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক।

জরুরি পরিচালন কেন্দ্রের মধ্যে আরও চারটি কেন্দ্র হলো নগর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, নগর উপাত্ত কেন্দ্র, নিরাপত্তা ও অন্তর্জাল পরিচালন কেন্দ্র এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২৩
এসসি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।