ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের সহযোগিতায় ৬ বছর পর যুবক ফিরে পেল পরিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২৩
পুলিশের সহযোগিতায় ৬ বছর পর যুবক ফিরে পেল পরিবার

চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলা পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল আবুল হোসেন মানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ৬ বছর পর মো. টিপু (২৮) নামে ভারসাম্যহীন যুবক ফিরে পেল তার পরিবারের সদস্যদেরকে।  

কনস্টবল মানিকের এই ধরনের কাজ এটিই প্রথম নয়, পুলিশের চাকরিতে যোগদানের পর এই পর্যন্ত তিনি ২২ জন অজ্ঞাতনামা মানসিক ভারসাম্যহীন পুরুষ ও মহিলা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে তাদের অভিভাবকদের নিকট হস্তান্তর করে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে চাঁদপুর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

জেলা পুলিশ জানায়, কনস্টেবল মানিক গত ৩০ জুলাই অজ্ঞাতনামা ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক টিপুকে দেখাশোনা করে আসছিল। অবশেষে গত ৩ আগস্ট তাকে চাঁদপুর আদালত চত্বর থেকে উদ্ধার করে নিজ হাতে দাঁড়ি, চুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নতুন জামা কাপড় পরিধান করিয়ে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুরের অর্পণ নামে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করে।

এরপর মানিকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) ও বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা ভবঘুরে ব্যক্তির পরিবারের সন্ধানে প্রচার চালায়। সর্বশেষ সোমবার (৭ আগস্ট) অজ্ঞাতনামা যুবকের পরিচয় মিলে। ওই যুবক টিপু কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার পুরাতন চৌধুরী পাড়ার মো. ছবির মিয়ার ছেলে। পরিচয় পাওয়ার পর টিপুর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের চাঁদপুর আসার জন্য যোগাযোগ করা হয়।

তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে টিপুকে পরিবারের নিকট পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও টিপুর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এসপি।  

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় ও রাশেদ উপস্থিত ছিলেন।

কনস্টেবল আবুল হোসেন মানিকের মানবিক কাজের বিবরণ হিসেবে জেলা পুলিশ জানায়, মানিক ইতঃপূর্বেও কক্সবাজার জেলা পুলিশে কর্মরত থাকাকালীন নয়জন, চট্টগ্রাম শহর হতে তিনজন, নোয়াখালী সদর হতে একজন, লক্ষ্মীপুর সদর হতে চারজন এবং চাঁদপুর জেলা সদর হতে টিপুসহ পাঁচজনসহ ২২ জন অজ্ঞাতনামা মানসিক ভারসাম্যহীন পুরুষ ও মহিলা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে তাদের অভিবাকদের নিকট হস্তান্তর করে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

এছাড়াও তিনি এ পর্যন্ত ২৯ বার স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন। সে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গ সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে কাজ করে যাচ্ছেন।  

মানিক লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার রোকনপুর গ্রামের রুহুল আমিন ও নুরজাহান দম্পত্তির ছেলে। তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে যোগদান করেন।

কনস্টেবল মানিক জানান, ভবিষ্যতে তার সামর্থ্য অনুযায়ী বেতনের টাকার কিছু অংশ দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন, দুস্থ, এতিম, গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে চাকরির পাশাপাশি দাঁড়াতে চায়।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ মহৎ কাজটি পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এ ধরনের মানবিক কাজ জেলা পুলিশ প্রতিনিয়ত করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২৩
এসএম
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।